জাজিরায় ১১তম স্প্যান বসছে কাল মঙ্গলবার। সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৩৩ ও ৩৪ নম্বর খুঁটির ওপর ‘৬সি’ নম্বর স্প্যানটি বসানো হবে। সে অনুয়ায়ী লিফটিং ফ্রেম ৩৫ নম্বর থেকে খুলে এনে ৩৪ নম্বর খুঁটিতে স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া ‘৬সি’ নম্বর স্প্যান স্থাপনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
পদ্মা সেতুর দায়িত্বশীল এক প্রকৌশলী জানান, সোমবার ভাসমান ক্রেনবাহী জাহাজটি কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটি নিয়ে রওনা হয়েছে। সকাল ৮টার দিকে এটি রওনা হয়ে সাড়ে ১০টার দিকে ৩৩ ও ৩৪নং খুঁটির সামনে চলে আসে। স্প্যানবাহী জাহাজটি যথাযথ স্থানে নোঙ্গর করা হয়েছে। এরপর মঙ্গলবার সকালে স্প্যানটি খুঁটিতে বসানো হবে। এই স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে সেতুর দৃশ্যমান হবে ১৬৫০ মিটার। মাওয়া কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে তিন হাজার ৬শ’ টন ধারণ ক্ষমতার ‘তিয়ান ই ভাসমান’ ক্রেনটি বহন করে নিয়ে যায়। ধুসর রংয়ের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ৩ হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটি কাল বসানো হবে।
এছাড়া পরবর্তীতে চলতি মাসেই ১২ নম্বর স্প্যানটিও বসানোর কথা জানিয়েছেন ওই প্রকৌশলী। তবে স্প্যানটি বসানো হবে অস্থায়ীভাবে। এই স্প্যানটি স্থায়ীভাবে বসবে ৩২ ও ৩৩ নম্বর খুঁটির ওপর। কিন্তু ৩২ নম্বর খুঁটিটি পুরোপুরি সম্পন্ন না হবার কারণে এটি ৩২ ও ৩৩ নম্বর খুঁটির কাছাকাছি কোনও খুঁটিতে অস্থায়ীভাবে বসানো হবে। কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে জায়গা সংকুলান না হবার কারণে ১২ নম্বর স্প্যানটি অস্থায়ীভাবে খুঁটির ওপর রাখার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন ওই প্রকৌশলী।
এদিকে মূল সেতুর ২৯৪টি পাইলের মধ্যে ২৫৫টি পাইল সম্পন্ন হয়ে গেছে। বাকি ৩৯টি পাইল খুব অল্প সময়ের মধ্যে স্থাপন করা হবে বলে প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন। এই জুনের মধ্যে আরও ৮টি পাইল স্থাপন করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন এই প্রকৌশলী।
সূত্র আরও জানায়, মাওয়া কুমারভোগ কন্সট্রাকশন ইয়ার্ডে ২১টি স্প্যান আছে। এর মধ্যে ১০টি স্প্যান বসানো হয়েছে। এখন ১০টি স্প্যান আছে ইয়ার্ডে। এছাড়া ‘৬সি’ নম্বর স্প্যানটি ৩৩ ও ৩৪ নম্বর খুঁটির ওপর বসানোর জন্য নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে পদ্মা সেতুতে তিনটি হ্যামারের মধ্যে ১৯০০কিলোজুল ক্ষমতা সম্পন্ন একটি হ্যামার সার্ভিসিংয়ে আছে। অপর দু’টি হ্যামার কাজ করছে।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। সেতু নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি এবং নদী শাসনের কাজ করছে সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি প্রতিষ্ঠানউ চীনের। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।
ইত্তেফাক/আরকেজি