অদক্ষ চালক, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, চালকের অসতর্কতা এবং দায়িত্ব পালনে সংশ্লিষ্টদের অনীহাই সড়ক দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। একই সঙ্গে সড়ক নির্মাণে প্রকৌশলগত ত্রুটি ও পথচারীদের অসচেতনাকেও দায়ী করা হয়েছে। সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনা ও বিশৃঙ্খলার কারণ খুঁজতে গিয়ে এমন তথ্য পেয়েছে সংশ্লিষ্ট কমিটি। সমস্যা সমাধানে ১১১টি সুপারিশও চূড়ান্ত করেছে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ কমিটি।
গতকাল সচিবালয়ে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের হাতে ঐ প্রতিবেদন তুলে দেন কমিটির প্রধান সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা।
সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়নে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২৬তম সভায় একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি এ লক্ষ্যে ১১১টি আশু করণীয়, স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশমালা তৈরি করে।ৎ
আরও পড়ুন : রোহিঙ্গারা যায়নি দাবিতে অনড়
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে সড়কমন্ত্রী বলেন, দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনের পাশাপাশি সমস্যা সমাধানে বাস্তবায়নযোগ্য ১১১টি সুপারিশ করেছে কমিটি। এর মধ্যে আশু করণীয় ৫০টি, স্বল্পমেয়াদি ৩২টি এবং দীর্ঘমেয়াদি ২৯টি সুপারিশ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দ্রুততম সময়ে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনতা ও শিক্ষা, প্রচার-প্রচারণা, মহাসড়কে প্রকৌশলগত ত্রুটি সমাধান, গতিরোধক, বাস স্টপেজ, ডিভাইডার, লেন, লেভেল ক্রসিং, মহাসড়কের সঙ্গে গ্রামীণ রাস্তার সংযোগ ও ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করা।
বৈঠক শেষে সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিবেদন গ্রহণ করা হলো মাত্র। এই প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করা হবে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ফের বৈঠকে বসার পর এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় চায়—একটি টাস্কফোর্স গঠন করে, ঐ টাস্কফোর্সের মাধ্যমে সড়কে শৃঙ্খলা ও দুর্ঘটনা রোধে ঐসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিক। আইনটি কার্যকর করতে বিধিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। এ লক্ষ্যে স্টেক-হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। স্বল্পতম সময়ে আইনটি কার্যকর হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, সাংস্কৃতিক কর্মী রোকেয়া প্রাচী, হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক ব্যারিস্টার মাহাবুবুর রহমান, এক্সিডেন্ট রিসার্স ইনস্টিটিউটের প্রধান কাজী সাইফুন নেওয়াজসহ কমিটির অন্য সদস্য এবং মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
ইত্তেফাক/কেআই