বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বাংলাদেশে বেড়েছে শিশু আত্মহত্যা

আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ২১:৪৬

বাংলাদেশে শিশু আত্মহত্যার প্রবণতা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। গত বছরের থেকে চলতি বছরে এর সংখ্যা বেশি। 

বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্যানুযায়ী, ২০১৮ সালে ২৯৩ জন শিশু আত্মহত্যা করেছে। আর চেষ্টা করেছে ২২ জন শিশু। ২০১৭ সাল শিশু আত্মহত্যার সংখ্যা ছিল ২১৩ জন। আর চেষ্টা করেছে ১১ জন শিশু। ফলে দেখা যায় চলতি বছর ৮০ জন শিশু বেশি আত্মহত্যা করেছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও শিশু অধিকার কর্মীরা বলছেন, শিশুদের বিষয়ে পরিবার ও শিক্ষকদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। একই সঙ্গে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সুবিধা নেই।

বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক মো. আবদুস শহীদ বলেন, শিশু আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ার কারণ হচ্ছে, পড়াশোনায় মাত্রাতিরিক্ত চাপ, পরীক্ষায় খারাপ ফলাফল, আত্মমর্যাদায় আঘাত, পিতামাতার দ্বারা দমন। এসব মানসিক চাপ নেওয়ার মত সক্ষমতা অনেক শিশুরই নেই। ফলে যারা চাপ নিতে পারে না তখন তারা আত্মহত্যার চেষ্টা করে।

সবশেষে রাজধানীর নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী অরিত্রী অধিকারী আত্মহত্যার পর বিষয়টি আবার আলোচনায় আসে। 

৩ ডিসেম্বর ভিকারুননিসার নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারী (১৫) আত্মহত্যা করে। নিজের সামনে বাবা-মায়ের অপমান সইতে না পেরে এ পথ বেছে নেয় সে। 

আরো পড়ুন: এবার শিক্ষকের মুক্তির দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

গত রবিবার পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোন সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল অরিত্রী। ফোনে নকল থাকার অভিযোগ তুলে তাকে পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর ওই ছাত্রীর বাবা-মাকে ডেকে পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। ৩ ডিসেম্বর সোমবার সকালে তারা স্কুলে যান এবং মেয়ের হয়ে কয়েকবার ক্ষমা চান। কিন্তু এরপরও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস তাদের অপমান করেন এবং স্কুল থেকে অরিত্রীকে ছাড়পত্র দেওয়ার ঘোষণা দেন।

নিজের সামনে বাবা-মায়ের এমন অপমান সইতে না পেরে ওইদিন দুপুরে শান্তিনগরের বাসায় ফিরে নিজের রুমে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে ওই ছাত্রী। এ ঘটনার জেরে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠে ভিকারুননিসার ক্যাম্পাস।

এরপর ৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর পল্টন থানায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিনাত আক্তার ও শ্রেণি শিক্ষিকা হাসনা হেনার বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা দায়ের করেন অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী।

ক্যাথলিক বিশপসের স্বাস্থ্যসেবা কমিশনের সচিব ড. এডওয়ার্ড পল্লাব রোজারিও বলেন, শিশু এবং কিশোর আত্মহত্যার পরিমাণ সরকারি পরিসংখ্যানগুলির চেয়ে আরো বেশি হবে। খবর: ইউসিএ নিউজ

ইত্তেফাক/জেডএইচ