শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শুভ উদ্যোগগুলো কেন ব্যর্থ হয়?

আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২০, ১৫:৫৬

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নেওয়া ভালো ভালো উদ্যোগের মধ্যে সরকারি জমি উদ্ধার করে বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন, স্থানে স্থানে টয়লেট স্থাপন, যানজট নিরসনে পরিত্যক্ত বাস-ট্রাক স্টেশনগুলো উদ্ধার করে রাস্তা নির্মাণ, ফুটপাত দখলমুক্ত করা, নগরী পরিষ্কার রাখার জন্য মিনি ডাস্টবিন স্থাপন উল্লেখযোগ্য। এইসব উদ্যোগ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। কিছু জায়গায় তা থাকলেও সময়মতো পরিষ্কার না করায় সেগুলো ময়লার স্তূপ হয়ে ওঠে। জনসচেতনতার অভাবে দেখা গেছে—পাশেই বিন খালি পড়ে আছে, অথচ ময়লায় পরিপূর্ণ বিনের আশপাশ!

অন্যদিকে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে শতাধিক ট্রেন ছেড়ে যায় দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে। অধিকাংশ ট্রেনই যায় কাওরানবাজার হয়ে মহাখালী ও উত্তরা দিয়ে। ব্যস্ততম নগরীর ভেতর দিয়ে চলাচলের কারণে যানজটময় শহরে আরো যানজট সৃষ্টি হয়। এমনকি রেললাইনের দুপাশেই ১০ ফুট দূরত্বে মানুষ চলাচলের নিয়ম থাকলেও কেউ তা মানে না। রেললাইনের ওপর দিয়েই হাজার হাজার মানুষ চলাচল করছে। অসাবধানতাবশত ট্রেনে কাটা পড়ে মারাও যাচ্ছে মানুষ। অবশেষে দেখা গেল মহাখালী-কাওরানবাজার এলাকার রেললাইনের দুপাশ দিয়ে ১০ ফুট উঁচু করে কাঁটাতার ও প্লাস্টিক বা নাইলনের তার দিয়ে বেড়া দেওয়া হচ্ছে, যাতে পথচারীরা রেললাইন অতিক্রম করতে না পারে এবং কোনো দুর্ঘটনার শিকার না হয়। কিন্তু কে শোনে কার কথা।

সরেজমিনে দেখা যায়, কাজ শেষই হয়নি—অথচ অনেক জায়গায় সেই জাল ছিঁড়ে গেছে। সেই ছেঁড়া অংশ দিয়েই মানুষ দেদার রেললাইন পার হচ্ছে, অনেকে রেললাইনের ওপর দিয়েও হাঁটছে। আশেপাশে পুলিশ থাকলেও কাউকে কিছু বলছে না। এমনকি ছেঁড়া অংশ আরো বড় করে রেললাইন পার হচ্ছে। আর পুলিশই বা করবে কী? আমরা নিজেরাই যদি সচেতন না হই! অথচ এই প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ব্যর্থ হচ্ছে এই শুভ উদ্যোগও।

বিশেষ করে শহর অঞ্চলের রেললাইনে প্রতি এক কিলোমিটারে দুজন রেল-পুলিশ ও দুজন আনসার সদস্যকে প্রতিদিন ১৬ ঘণ্টায় ২ শিফটে ডিউটি দেওয়া হলে যত্রতত্র রেললাইন পারাপার বন্ধ এবং রেলে কাটাপড়ার সংখ্যা অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। জরিমানার বিধানও রাখা যেতে পারে। তাতে এই শুভ উদ্যোগের মর্মান্তিক মৃত্যুও হবে না। যে টাকা দিয়ে জাল, কাঁটাতার ও লোহার পিলার দেওয়া হচ্ছে, সেই টাকা দিয়ে আনসার সদস্যদের বেতন-বোনাস দেওয়া যাবে। রেলপথও সমূহ আর্থিক ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে। কোনো প্রকল্প নিতে গেলে তা যদি যথাযথ স্টাডি না করে নেওয়া হয়, তবে সেই উদ্যোগ বা প্রকল্প ব্যর্থ হওয়াই স্বাভাবিক।

লেখক: শিক্ষার্থী, ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়া, ঢাকা।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন