শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিশেষজ্ঞমত

করোনার ভ্যাকসিন ও গ্লোবের প্রয়াস

আপডেট : ০৫ জুলাই ২০২০, ১৮:২২

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২ জুলাইয়ের আপডেট অনুযায়ী বর্তমানে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে মোট ১৪৭ টি ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্টের কাজ চলছে। এদের মধ্যে ১৮ টি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এবং বাকি ১২৯ টি প্রি-ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের পর্যায়ে আছে। একটি ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্টের কয়েকটি পর্যায় আছে, সেগুলো হল-

★Exploratory stage
★Pre-clinical stage
★Clinical development
★Regulatory review and approval
★Manufacturing
★Quality control

উপরের সবগুলো ধাপ পেরিয়ে সাধারণ মানুষের নাগালে আসতে একটি ভ্যাকসিন গড়ে ১০-১৫ বছর সময় নেয়। মহামারির মত জরুরি পরিস্থিতিতে এই সময় কমিয়ে নিয়ে আসা হলেও কমপক্ষে দেড় থেকে দুই বছর সময় প্রয়োজন হয়। Emergency use authorization (EUA) পেলে আরো কম সময়ে একটি ভ্যাকসিন বাজারে আসতে পারে। জেনে রাখা ভালো যে, ৬০-৭০% ভ্যাকসিন প্রি-ক্লিনিক্যাল স্টেজ পার হলেও ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে বাদ পড়ে যায়। যেগুলো সফল হয় সেগুলোকেও অনেক সংযোজন বিয়োজনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ভ্যাকসিনের নানা প্রকারভেদ আছে। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে মূলত যেগুলো নিয়ে কাজ হচ্ছে, সেগুলো হল-

★Viral vector vaccine
★RNA vaccine
★DNA vaccine
★Inactivated vaccine
★Protein sub-unit vaccine

এদের মধ্যে প্রথম তিন প্রকারের ভ্যাকসিনের ধারণা একেবারেই নতুন। 

গ্লোব বায়োটেক একটি RNA (সম্ভবত) ভ্যাকসিন ডেভেলপমেন্ট করছে। Exploratory stage শেষ করে এই মুহূর্তে তাদের কাজ Pre-clinical stage এ আছে।  এরপর তারা এনিম্যাল মডেলে (ইঁদুর) ৬-৮ সপ্তাহের একটি regulated Pre-clinical trial দিবে। তাতে সফল হলে তারা clinical trial এর অংশ হিসেবে মানুষের শরীরে পরীক্ষা করার জন্য বিএমআরসির কাছে আবেদন করবে এবং পরবর্তীতে Manufacturing এর জন্য ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কাছে আবেদন করবে। অনুমতি পেলে তারা ৫০-৭০ লাখ ভ্যাকসিন সরবারহ করতে পারবে বলে জানিয়েছে। 

ভ্যাকসিন বা ডায়াগনস্টিক কিট ডেভেলপমেন্ট, ভাইরাসের জেনম সিকুয়েন্সিং, ইত্যাদি ধরণের কাজগুলো যেমন কয়েকটি দেশে নিয়মিত হয়ে থাকে আবার অনেক দেশে একেবারেই হয় না। আমাদের দেশে গবেষণা বলতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিদেশি জার্নালের কপি-পেস্ট বুঝায়। তারপরও ইদানিং কিছু ভালো কাজ হচ্ছে। সুতরাং অর্জনকে ধারণ করতে শিখুন, উৎসাহ দিন, উৎযাপন করুন। এমন কোন নিয়ম নেই যে সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন ছাড়া সংবাদ সম্মেলন করা যাবে না। বরং দূর্যোগের সময় এরকম ইতিবাচক খবরগুলো কিছুটা হলেও হতাশা দূর করে। দুই একটা গণমাধ্যম অতিরঞ্জিত শিরোনাম করলে সেটির দায় গ্লোব বায়োটেকের না। একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন সবাই বুঝবে না, এটাই স্বাভাবিক। এটি সংশ্লিষ্টদের কৌতুহল মেটানোর জন্য প্রস্তুত করা হয়। এ জন্যই ভাইরাস এবং ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞরা গ্লোব বায়োটেকের কাজে আশার আলো দেখছেন। তারা চুড়ান্তভাবে সফল হোক বা না হোক, তাদের এই উদ্যোগ ইতিমধ্যে বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।

লেখক: তথ্য প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্য, জামালপুর-৪ এবং চিকিৎসক।

ইত্তেফাক/আরএ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন