শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আলোর পথযাত্রী

আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২১, ০১:৪৮

২০২১ আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। জানুয়ারি দিয়ে যাত্রারম্ভ এ জয়ন্তীর। ১৯৭২ সালের এ মাসের ১০ তারিখে মৃত্যুঞ্জয়ী বঙ্গবন্ধুর স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে আমাদের বিজয় পূর্ণতা পেয়েছিল। এই প্রত্যাবর্তনকে বঙ্গবন্ধু বর্ণনা করেন ‘বন্দিদশা থেকে স্বাধীনতা, নিরাশা থেকে আশা’র যাত্রা হিসেবে। ৮ই জানুয়ারি তিনি ২৯০ দিন পাকিস্তানের কারাগারে প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর প্রহর গুনতে গুনতে লন্ডন-দিল্লি হয়ে মুক্ত স্বাধীন স্বদেশের মাটিতে পৌঁছেছিলেন। ২৫শে মার্চ ১৯৭১ তারিখে মধ্যরাতে তথা ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা প্রচারের ব্যবস্থা করার অব্যবহিত পরেই তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন। গ্রেফতারের পর থেকে মুক্তির আগ পর্যন্ত তিনি পাকিস্তানিদের হাতে বন্দি ছিলেন নিরবচ্ছিন্নভাবে। এ সময়ে তাকে কঠিন অবস্থার মধ্যদিয়ে অতিক্রম করতে হয়েছে। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট তাকে পাকিস্তান রাষ্ট্রের প্রধানতম বা পয়লা নম্বরের শত্রু ঘোষণা করে তার বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় প্রহসনের বিচারের ব্যবস্থা করেছিল (লক্ষণীয় যে, এন্তার বিপ্লবী আর ঘোষক দাবিদারের উপস্থিতি সত্ত্বেও সেদিন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী প্রহসনের বিচারে শেখ মুজিবের ফাঁসির ব্যবস্থা করেছিল)। পাকিস্তানের নির্জন প্রান্তরের এক নির্জনতম কারাপ্রকোষ্ঠে নিঃসঙ্গ সময় কেটেছে এ সময় তার। পৃথিবীর সঙ্গে ন্যূনতম সংযোগ ছিল না। কোনো খবরাখবর পেতেন না। কী ঘটে যাচ্ছে তার প্রিয় স্বদেশে, সে সম্পর্কে তার সামান্যতম কোনো ধারণা ছিল না ।

এমন অবস্থায় থেকেও তিনি এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে আদৌ আগ্রহী হননি যা তার মুক্তিকে ত্বরান্বিত করতে পারত বা কার্যত বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও পাকিস্তানের বিভাজনকে নস্যাত্ করে দিতে পারত। যে সময়টার কথা আমরা এখানে আলোচনা করছি সে সময়টার কথা বিশ্বের তাবত্ লেখনি একত্র করেও সঠিকভাবে কারো উপলব্ধিতে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব নয়। ঘটনার ঘনঘটায় সেদিন যারা উপস্থিত থেকে মুক্তিযুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন (এমনকি বিপক্ষেও যারা ছিল), পাকিস্তানের ভাঙন প্রক্রিয়া দেখছিলেন অবরুদ্ধ স্বদেশভূমিতে অথবা ভারতের মাটিতে আশ্রয় নিয়ে অথবা সুদূর পাকিস্তানে আটকা পড়ে তারাও সেই দুঃসময়ে, অনেক সময়ে এই ভেবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়তেন যে, কবে এই দুঃসময়ের অবসান ঘটবে। অনেকে অধৈর্য হয়ে পাকিস্তানের ফাঁদে পা দিয়েছে, অনেকে স্বাধীনতা আদৌ অর্জিত হবে কি-না, সেই সন্দেহের দোলাচলে দুলেছেন। এমনকি প্রবাসী সরকারের অন্যতম মন্ত্রী খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে একটি ক্ষুদ্র অথচ প্রভাবশালী গোষ্ঠী এসব সন্দেহ ও অধৈর্যকে পুঁজি করে, এমনকি শেখ মুজিবের মুক্তির ইস্যুকে পুঁজি করে পাকিস্তানের সঙ্গে একটা সমঝোতায় পৌঁছা যায় কি না, সে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এই বৈরী অবস্থার ভেতর দিয়ে সমগ্র বাংলাদেশ চলছিল। অন্যদিকে পাকিস্তানি নির্যাতন, নিপীড়ন, যুদ্ধাপরাধ সকল মাত্রা ছাড়িয়ে অব্যাহত গতিতে চলছিল। একটা সময় এমন হয়ে উঠেছিল যে, অতি বড় আস্থাশীল ব্যক্তির কাছেও স্বাধীনতা যেন এক সুদূরপরাহত বিষয় অথবা স্বাধীনতা যেন এক সোনার হরিণ হয়ে উঠেছিল।

কিন্তু এই ঘটনার ঘনঘটা সম্পর্কে যিনি আদৌ কোনো কিছু জানছিলেন না, তিনি কিন্তু মুহূর্তের জন্যও জনগণের ওপর আস্থা হারাননি বা স্বাধীনতার সম্ভাবনা নিয়েও মনের অজান্তেও সন্দিহান হননি। জনগণের ওপর অবিচল আস্থা, স্বাধীনতার প্রশ্নে আপসহীন অঙ্গীকার, সংগ্রামের অজেয় চেতনা তাকে কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে ফাঁসির রুজুর হাতছানির মধ্যেও বেঁচে থাকার অফুরান সাহস জুগিয়েছিল। কখনো তিনি বিচলিত বোধ করেননি।

পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তিকে তাই বঙ্গবন্ধু দেখেছেন ‘অন্ধকার থেকে আলোর পথের যাত্রা’ এবং ‘দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির অভিযাত্রা’ হিসেবে। একজন মানুষ যিনি নির্জন প্রকোষ্ঠে নির্মম নিঃসঙ্গতায় সময় অতিক্রম করেছেন, ঘড়ির কাঁটার বহমানতা ছাড়া যার জীবনে সময় তখন থমকে ছিল, স্বাধীনতার সংগ্রাম আর মুক্তিযুদ্ধের অবস্থা সম্পর্কে যিনি কিছুই অবহিত হচ্ছিলেন না, স্বাধীনতার প্রশ্নে সেই মানুষটির অবিচলতা আজকের দিনে স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে বসে অনেক অর্বাচীনের ধারণায় নাও আসতে পারে। সেই সময়ের যারা সাক্ষী, তাদের কেউ কেউ যখন এ নিয়ে নানা কথা বলতে চেষ্টা করেন, তখন আমরা যারা সক্রেটিসের সময়ের নই, তারা সক্রেটিসের সময়ের অবস্থাটা অথবা মোনাফেক সর্দার আবদুল্লাহ ইবনে উবাইয়ের অবস্থানটা সহজেই হূদয়ঙ্গম করতে পারি।

একটি আন্দোলনের মধ্যমণি যখন তার সব সহকর্মীকে নিরাপদ আশ্রয়ে গিয়ে প্রতিরোধযুদ্ধ গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়ে নিজে সে পথে না যেতে চান, তখন সহজেই তার দুঃসাহসী সিদ্ধান্তের সুদূরপ্রসারি ভাবনা বুঝতে পারা যায়। একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা প্রকাশ্যে নানাভাবে সেই ’৭০-এর ঘূর্ণিঝড়ের সময় থেকে সমগ্র বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করে আসছিলেন, যিনি ৭ই মার্চের বক্তৃতায় ‘ঘরে ঘরে দুর্গ গড়তে’, ‘ভাতে মারব পানিতে মারব’ বলে দেশবাসীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার মতো একজন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা যখন একটি অখণ্ড দেশকে দ্বিখণ্ডিত করে খণ্ডিত অংশের স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুতি নেন তখন তাকে নানা কৌশল এবং আড়ালের আশ্রয় নিতে হয়—এটাই স্বাভাবিক। তাই সবকিছু বুঝেও যারা না-বোঝার ভান করে, সেসব অর্বাচীনদের অবিমৃশ্যকারিতা নিয়ে আমরা তেমন একটা কথা বলতে চাই না। ওরা জ্ঞানপাপী অথবা সেই গোষ্ঠীর লোক, যারা নিজেদের অপারগতাকে ঢাকা দিতে নানা কূটচালের আশ্রয় নেয় অথবা তারা সেসব গোষ্ঠীর লোক, যারা সেই সময়ে বিপক্ষে অবস্থানে থাকার অপরাধ ঢাকতে গিয়ে নানা বাহানা খুঁজে বেড়ায়।

২৫শে মার্চের পর পাকিস্তান রাষ্ট্র তার প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের যিনি জনক সেই শেখ মুজিবকে বন্দি করে প্রহসনের বিচারে দাঁড় করিয়েছিল। অসম্ভব অকল্পনীয় মানসিক চাপ প্রয়োগ করেছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কখনো মচকাননি বা ভেঙেও পড়েননি। নিজ লক্ষ্যে অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস রেখে তিনি পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে এক অসম ও সুকঠিন মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চালিয়ে গেছেন। একদিকে তার প্রিয় সহকর্মীবৃন্দ ও দেশবাসী প্রবাসী বিপ্লবী সরকার গঠন করে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে গেছেন, অন্যদিকে তিনি নিজে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় শক্তির বিরুদ্ধে একা লড়ে গেছেন হিমালয়ের অটলতা নিয়ে। তার সামান্যতম পদস্খলন আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে বিপথগামী করতে পারত এবং আমাদের স্বাধীনতাকে করে দিতে পারত ব্যর্থ। আর এখানেই মুজিব-নেতৃত্বের বিশালতা, সৌন্দর্য আর মহিমা নিহিত। নিঃসঙ্গ এক মানুষের নির্জন কারা প্রকোষ্ঠে থেকে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া মহামতি নেলসন ম্যান্ডেলাই এই যুদ্ধে তার একমাত্র জুড়ি।

অবশ্য দুটি দেশের সংগ্রামের পটভূমি সম্পূর্ণ ভিন্ন। দক্ষিণ আফ্রিকা দক্ষিণ আফ্রিকাই আছে। লড়াইটা হচ্ছিল স্বদেশে পরবাসী না হয়ে নিজেদের মতো করে দেশটাকে গড়ে নেওয়ার। আর বাংলাদেশের লড়াই ছিল একটি দেশকে আরেকটি দেশের জবরদখল থেকে মুক্ত করে সম্পূর্ণ নতুন একটি পরিচিতি দেওয়ার। শুধু মানুষের স্বাধীনতাই নয়, ভূখণ্ডের পরিচিতি ও মানচিত্রও এখানে পরিবর্তন হয়েছে এবং বিষয়টা বেশ জটিলই ছিল। ২৫শে মার্চ, ১৯৭১ পর্যন্ত দেশটি ছিল আরেকটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের অবিচ্ছিন্ন অংশ। দুই দশক আগেও দেশটিকে তার পূর্বদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ভাবার আদৌ কোনো সুযোগ ছিল না। এমনকি মনের অগোচরেও কেউ এমনটা ভাবতে সাহসী ছিলেন না (দু-চার জন ব্যতিক্রম ছাড়া, যাদের অন্যতম ছিলেন তরুণ মুজিব)। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে সঠিক আঙ্গিকে দাঁড় করাতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০ই জানুয়ারি ১৯৭২-এ স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এক নবরূপ অর্জন করে। একটি স্থিতিশীল সরকার প্রতিষ্ঠা, একটি অস্থির পরিস্থিতিকে সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন জাদুমন্ত্রের মতো কাজ করেছিল। অন্যথায় আজও হয়তো আফ্রিকার অনেক বিবদমান গোষ্ঠী যেমন নিজেদের মধ্যে হানাহানিতে লিপ্ত, তেমন একটি সম্ভাবনা থেকে যেত। কেননা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়ও বিভিন্ন সমর-নেতা ও বিভিন্ন মতাদর্শগত গোষ্ঠীর বিরোধের কথা অজানা নয়। অথবা এমনটাও অস্বাভাবিক কিছু নয় যে, তার অনুপস্থিতি আমাদের ভূখণ্ডে এখনো মিত্রবাহিনীর উপস্থিতিকে অনিবার্য করে তুলত। ১০ই জানুয়ারি থেকে ১৭ই মার্চ কিন্তু লম্বা সময় নয়। মাত্র এই সময়ের মধ্যে তিনি তার বিশাল ব্যক্তিত্ব ও জনপ্রিয়তা এবং তার প্রজ্ঞাবান কৌশলকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের মাটি থেকে মিত্রবাহিনীকে সরিয়ে নিতে দুর্দিনের বন্ধু ও মিত্র ভারত-রাষ্ট্রকে সম্মত করাতে সক্ষম হয়েছিলেন। এটা যে কত বড় সাফল্য তা আজকের অবস্থানে দাঁড়িয়ে বোঝা সহজ বিষয় নয়।

মুক্তির কয়েক যুগ পরও যখন স্বদেশের মাটিতে মিত্রবাহিনীর চলে যাওয়া একমাত্র সম্ভব হয়েছিল শেখ মুজিবের উপস্থিতির কারণেই। শুধু তাই-ই নয়, তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশকে বড় ধরনের প্রতিহিংসামূলক হত্যাযজ্ঞ থেকেও রেহাই দিয়েছিল।

সামগ্রিক পর্যালোচনায় এ কথা আজ নিঃসন্দেহে প্রমাণিত যে, একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি-রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে উঠতে তার স্বদেশভূমিতে ফিরে আসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তিনি ছিলেন জাতির কাছে একটি বড় প্রেরণা। দীর্ঘ সংগ্রাম, ত্যাগ-তীতিক্ষা, আন্দোলন ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার প্রশ্নে বাঙালি জাতি যখন কঠিন এক বাস্তবতার মুখোমুখি তখন পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন আমাদের স্বাধীনতাকে সব প্রভাবমুক্ত রাখতেও সহায়তা করেছে। বাংলাদেশ তার নিজস্ব পরিচিতি নিয়ে—ভূখণ্ডগত, সংস্কৃতিগত, ভাষাগত ও প্রভাবগত সব বিবেচনায় যে আজ বিশ্ব-মানচিত্রে এক স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তুলেছে, তা সম্ভব হয়েছে তার—বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কারণেই। তাই তার সেই বিখ্যাত উক্তি যে (পাকিস্তান থেকে তার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন হচ্ছে) অন্ধকার থেকে আলোর পথে যাত্রা, দাসত্ব থেকে মুক্তির পথে যাত্রা, যথার্থই একটি সঠিক মূল্যায়ন। নিজ বিশ্বাস, মূল্যবোধ, দেশের মানুষ ও দেশের মুক্তির প্রতি অবিচল অটল আস্থাবান এক বিশাল মানুষ আমাদের রাষ্ট্রপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যথার্থ ও আক্ষরিক অর্থেই ছিলেন এক আলোর পথযাত্রী। তার জয় হোক। জয়তু মুজিব।

লেখক : যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও সংসদ সদস্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩

ইত্তেফাক/টিআর

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন