বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সমুদ্রের ওপারের বাস্তবতাবিবর্জিত সিদ্ধান্তের কারণেই বিএনপির দৈন্যদশা : তথ্যমন্ত্রী

আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ১৭:০৪

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সমুদ্রের ওপারের বাস্তবতাবিবর্জিত সিদ্ধান্তের কারণেই বিএনপির দৈন্যদশা ও জনগণবিচ্ছিন্নতা।’

 

বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দীন খাঁর ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলাউদ্দীন খাঁ স্মৃতি ফাউন্ডেশন আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক রাজনীতি প্রসঙ্গে তিনি একথা বলেন।

 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব বলেছেন যে, ভবিষ্যতে না কি আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে লোক যোগ দেবে। আসলে তাদের দল থেকে যেভাবে দল ত্যাগ শুরু হয়েছে এটিকে আড়াল করার জন্য তিনি এ ধরণের কথা বলে আত্মতুষ্টি পাওয়ার চেষ্টা করছেন।’

 

‘তবে এধরণের কথা শুনে অনেকে বলছে যে ফখরুল ইসলাম সাহেবে কেন আবার গয়েশ্বর বাবুর মতো অপ্রাসঙ্গিক কথা বলা শুরু করছেন’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘উনি তো ঠিক এভাবে বলেন না। কারণ গয়েশ্বর বাবু অনেক সময় বেফাঁস অপ্রাসঙ্গিক কথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব গয়েশ্বর বাবু হয়ে গেলেন কখন- এই প্রশ্ন অনেকেই আমাকে করেছে।’

 

ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপি থেকে অনেকেই দলত্যাগ করেছে, আরও অনেকে করবে, তারা সেটি ভবিষ্যতে দেখতে পাবেন। আসলে বিএনপি নেতারা দলকে নিয়ে প্রচণ্ড হতাশ। সেখানে নিজের মত প্রকাশের কোনো স্বাধীনতা নেই। এমনকি ফখরুল সাহেবেরও সেখানে নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। তারা নিজেরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। সিদ্ধান্ত আসে সমুদ্রের ওপার থেকে। যে সিদ্ধান্তের সাথে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। সেই কারণেই বিএনপির আজকে এই দৈন্যদশা, সেই কারণেই জনগণ বিচ্ছিন্ন। নানা কথা বলে আত্মতুষ্টি পাওয়ার চেষ্টা করলেও দলকে তারা আর ঠেকাতে পারবে না।’  

 

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দলে অনেক বিএনপি নেতা যোগ দিতে চায়। আমরা যে-কাউকে আমাদের দলে নিতে চাই না। কেন্দ্রীয়ভাবে বা স্থানীয়ভাবেও যে-কাউকে আমাদের দলে প্রয়োজন নেই। অবশ্যই আওয়ামী লীগ একটি গণসংগঠন। সেখানে অন্য দল থেকে মানুষ আসতে পারবে না সেটি নয়। কিন্তু বিএনপির লোকজনকে আমাদের দলে নেয়ার প্রয়োজন নেই। দলত্যাগ করে আসলেও আমাদের দলে নিতে চাই না।’

 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে বলবো যে, তাদেরকে বাস্তবতাবিবর্জিত রাজনীতি, জনগণের প্রতিপক্ষ হয়ে জনগণের বিরুদ্ধে রাজনীতি, জনগণের ওপর হামলা পরিচালনা করার রাজনীতি, জনগণকে জিম্মি করার রাজনীতি করতে গিয়ে তাদের দলটি এখন জিম্মি হয়ে গেছে। অপরাজনীতি পরিহার না করলে বিএনপির পরিণতি ধীরে ধীরে ছোট হচ্ছে সেটি আরো ছোট হবে। বিএনপি এক সময় অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। আমরা সেটি চাই না।  আমরা চাই বিএনপি একটি শক্তিশালী দল হিসেবে টিকে থাকুক এবং জনগণের জন্য রাজনীতি করুক। কারণ দেশে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে হলে শক্তিশালী বিরোধী দল হওয়া প্রয়োজন আছে। এই জন্যই আমরা চাই বিএনপি একটি শক্তিশালী দল হোক।’

 

তথ্যমন্ত্রী এ সময় ওস্তাদ আলাউদ্দীন খাঁর অমর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘তাঁকে স্মরণ করে নতুন প্রজন্ম মৌলিক সুর নিয়ে কাজ করুক আমি সেটিই প্রত্যাশা করি। ওস্তাদ আলাউদ্দীন খাঁ শুধু সুরসম্রাটই ছিলেন না, তার সৃষ্ট সুরগুলো আমাদের সংগীত জগতে অমর হয়ে আছে। আজকাল অনেকেই গান গায়, কিন্তু মৌলিক গান খুব বেশি হয় না। এবং আজকাল মৌলিক সংগীতের চর্চা সেটি হয় না। এবং উচ্চাঙ্গ সংগীতের চর্চা, মৌলিক সংগীতের চর্চা, যেটি সংগীতকে সমৃদ্ধ করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেই চর্চা সংখ্যায় কমে গেছে।’

 

ওস্তাদ আলাউদ্দীন খাঁ স্মরণে আলোচনা সভা আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে আমাদের নতুন প্রজন্মকে যদি বিপথে পরিচালিত হওয়া থেকে বিরত রাখতে চাই, তাহলে সংগীত চর্চা, সংস্কৃতি চর্চা এবং খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই। যে সমস্ত অঞ্চলে সংস্কৃতি কর্মকাণ্ড ব্যাপক, সেখানে কিন্তু জঙ্গি তৎপরতা দ্রুত সফলভাবে দমন হয়েছে। এবং জঙ্গিবাদের মূল উৎপাটনের জন্য সরকারের কাজে সংস্কৃতি-সংগীত-ক্রীড়াচর্চা অত্যন্ত সহায়ক।’

 

আয়োজক সংস্থার সভাপতি কামাল হোসেন মাহমুদের সভাপতিত্বে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. আকতার হোসেন, জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের সদস্য মনিরুজ্জামান প্রমুখ সভায় বক্তব্য রাখেন।

 

ইত্তেফাক/ইউবি