বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

হলফনামায় সম্পদ গোপনের অভিযোগ তাবিথ আউয়ালের বিরুদ্ধে

আপডেট : ২০ জানুয়ারি ২০২০, ২৩:৪৮

প্যারাডাইস পেপার্সে নাম আসা ও দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার বিতর্ক শেষ হবার আগেই এবার নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালকে ঘিরে। অভিযোগ উঠেছে নির্বাচনী হলফনামায় সিঙ্গাপুরে থাকা মিলিয়ন ডলারের সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন এই প্রার্থী। সম্প্রতি নর্থ ইস্ট নাউ গণমাধ্যমে এমন দাবি করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সিঙ্গাপুরে ২০০৮ সালে যৌথ মালিকানায় নিবন্ধিত এনএফএম এনার্জি কোম্পানির ১০০০টি শেয়ারের মধ্যে ৩৪০ শেয়ারের মালিক তাবিথ আউয়াল। এছাড়া বাকি ৬৬০ শেয়ারের মালিক তাবিথ আউয়ালের দুই ভাই তাসফির আউয়াল এবং তাজওয়ার আউয়াল। নেত্র নিউজে বলা হয়, তাবিথ আউয়াল এবং তার ভাইয়েরা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক পরিচয়ে ওই কোম্পানিতে নিবন্ধন করেন। কোম্পানিটির পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন সিঙ্গাপুরের আরেকজন নাগরিক। কিন্তু তাবিথ আউয়াল নির্বাচনী হলফনামায় তার মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণাধীন যে ৩৭টি কোম্পানির তালিকা দিয়েছেন সেখানে বিপিসিএল ও এনএফএম এর নাম নেই।

সিঙ্গাপুরের একাউন্টিং এবং কর্পোরেট রেগুলেটরি অথরিটি (এসিআরএ) জানায়, প্রাথমিক পণ্য উৎপাদন এবং খাবার প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতে এনএফএম এনার্জি। এ ছাড়া বিভিন্ন জ্বালানী সংশ্লিষ্ট কোম্পানিতেও তারা বিনিয়োগ করে। বাংলাদেশ পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড এই এনএফএম এনার্জি (সিঙ্গাপুর) প্রাইভেট লিমিটেডের বড় অংশের মালিক। কোম্পানিটির সম্প্রতি প্রকাশিত আর্থিক বিবরনী থেকে জানা যায়, কোম্পানির বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ২১ লাখ ৩৪ হাজার ২৬৭ ডলার।

এনএফএম এনার্জি কোম্পানিটি বাংলাদেশ পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড (বিপিসিএল) এর একটি বড় অংশের মালিক। কিন্তু তাবিথ আউয়াল তার কোম্পানিটির নাম নির্বাচনী হলফনামায় অন্তর্ভুক্ত করেননি, যা বাংলাদেশের নির্বাচনী আইন ও বিধির লঙ্ঘন।

এদিকে পানামার ব্যবসা নিবন্ধক সংস্থার নথি এবং প্যারাডাইস পেপার্সে মাল্টিমোড ইন্টারন্যাশনাল নামের আরেকটি কোম্পানির সন্ধান পাওয়া গেছে। যে কোম্পানিটির ট্রেজারার (কোষাধ্যক্ষ) ও ডিরেক্টর হিসেবে রয়েছে তারেকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত তাবিথ আউয়ালের নাম। মাল্টিমোড ইন্টারন্যাশনাল এসএ নামক এই কোম্পানিটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন তাবিথের বাবা আব্দুল আউয়াল মিন্টু।

এদিকে বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন। সে প্রথমবারের মতো বিষয়গুলো শুনছে এবং বিস্তারিত না জেনে তিনি মন্তব্য করবেন না বলেও জানান।

এদিকে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনের অংশ নেয়া সকল প্রার্থীদের দেশের ভেতর এবং বাহিরের সকল সম্পত্তির হিসাব দিতে হবে।

এর আগে প্যারাডাইজ পেপারে তাবিথ আউয়ালের নাম আসা প্রসঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এই প্রার্থীর সম্পদের হিসেবে যাচাই করার অনুরোধ জানান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং তত্ত্ববধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল। তারা জানান, নির্বাচনের প্রার্থী যেই হোক, সে যদি দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ঠ প্রতিষ্ঠান থেকে খবর নেওয়া উচিত।

ইত্তেফাক/আরএ