বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

স্বাধীনতা রক্ষায় বিএনপির স্লোগান ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ : রিজভী

আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২০, ১৩:১৯

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী মাতৃভূমির ভৌগোলিক স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ আন্দোলনে রাজপথে নেমে আসার জন্য দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে ডাক দিয়েছেন তাতে দল-মত নির্বিশেষে দেশপ্রেমিক প্রতিটি মানুষকে এক কাতারে এসে সাড়া দিতে ও সকলকে সক্রিয় শরিক হতে আহ্বান জানিয়েছেন।

 

তিনি বলেন, এই ভয়াবহ দুঃসময়ে গোটা জাতির মুলমন্ত্র হোক ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’। সংশপ্তক আন্দোলনের মুল স্লোগান হোক ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’। দেশপ্রেমিক প্রতিটি মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিন। অন্যথায় চরমতম দুর্দিন আমাদের গোটা দেশ ও জাতির অস্তিত্ব তছনছ করে দিবে। চারদিক থেকে নিকষকালো আঁধার ঘনিয়ে আসছে।

 

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টায় নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ আহ্বান জানান। রিজভী বলেন, তারেক রহমান রবিবার লন্ডনে জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীর জনাকীর্ণ এক আলোচনা সভায় ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ আন্দোলনের কথা বলেছেন। তিনি এটার ব্যাখ্যা ও লক্ষ্য তুলে ধরেছেন। এটা শুধুমাত্র বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার আন্দোলন নয়, এই আন্দোলন মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলন, জনগণের বাংলাদেশ জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার আন্দোলন। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, বাক ও ব্যক্তিস্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন। এখনই বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে দলমত ভুলে সকলে না দাঁড়ালে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে দেশ।

 

রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় কারারুদ্ধ রেখে সরকার হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন।তাঁর জামিনে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সরাসরি বাধা দেয়া হচ্ছে।দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এনিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।দুর্নীতি লুটপাট, অন্যায় অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠ বেগম খালেদা জিয়াকে এই সরকার সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কারাবন্দি করে রেখেছে। তাঁকে সুচিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। জামিন পাওয়া তাঁর আইনগত অধিকার। তাঁকে জামিন পর্যন্ত দেয়া হচ্ছেনা। বিচারকের আসনে বসে আওয়ামী লীগের কথা মতো যেসব বিচারকগণ নিরপরাধ মানুষের সাথে অন্যায় আচরণ করছেন তাও দেশবাসী দেখছে। 

 

রিজভী বলেন, ডিজিটাল ডাকাতি এবং লুটপাটের যন্ত্র ইভিএম প্রতিবেশি ভারতের চেয়ে ১১ গুন বেশি টাকায় দুর্নীতির মাধ্যমে ক্রয় করে জনগণের উপর জোর করে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। ইভিএম ব্যবহারের মুল লক্ষ্য অর্থ লুটপাট এবং বর্তমান ভোট ডাকাত সরকারের লোকদেরকে জনপ্রতিনিধি বানানো। নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের ভোট চুরির সহযোগী। নির্বাচন কমিশন জনগণের কাছে এখন একটি হাসি-তামাশার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তাদের কাজ হলো একদিকে রাতের অন্ধকারে ভোট ডাকাতি অন্যদিকে সারাবিশ্বে বাতিল হয়ে যাওয়া ভোট চুরির ডিজিটাল যন্ত্র ইভিএম কেনার নাম করে শত শত কোটি টাকা লুটপাট। তারেক রহমান ইভিএম নিয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি তার বক্তব্যে তুলে ধরেছেন। রিজভী তারেক রহমানকে উদ্ধৃত করে বলেন, স্বাধীনতার দেড় দুই বছরের মাথায় ৭৩ সালের নির্বাচনেও হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় ব্যালট বাক্স এনে তাদের দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ। রেডিও টিভিতে ঘোষণা দিয়েও প্রার্থীর নির্বাচনী ফলাফল পাল্টে দিয়েছিলো আওয়ামী লীগ। কি কারণে স্বাধীনতার মাত্র দেড় বছরের মাথায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও আওয়ামী লীগকে ভোট চুরির আশ্রয় নিতে হয়েছে, এটি সবারই জিজ্ঞাসা। ৯৬, ২০০৮, ২০১৪ কিংবা ২০১৮ প্রতিটি নির্বাচনেই সেই ৭৩ সালের মতোই আওয়ামী লীগকে ভোট ডাকাতির আশ্রয় নিতে হয়েছে। ২০১৮ সালের পূর্ব পর্যন্ত এই সরকার ছিল অবৈধ সরকার। ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাত থেকে এই অবৈধ সরকারের নতুন খেতাব নিশিরাতের অবৈধ সরকার।জাতীয় কিংবা স্থানীয় নির্বাচনে যেভাবে বিএনপিকে হারিয়ে দেয়া হচ্ছে, এটা আসলে বিএনপির-ই হার নয়, বরং দেশের মানুষকে হারিয়ে দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশকে হারিয়ে দেয়া হচ্ছে। কারণ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি হেরে গেলে সেটি হতো বিএনপির হার। বিএনপি কিংবা প্রতিপক্ষকে যেভাবে হারানো হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে সবাই রাজপথে না নামলে আগামী দিনগুলোতে নিরাপদ দূরত্বে থাকলেও কারো মুখ খোলার সুযোগ রাখবে না এই সরকার।

 

ইত্তেফাক/এএম