বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

শুধু দলীয় লোকদের ত্রাণ দেওয়া হয়েছে : ফখরুল

আপডেট : ১৯ মে ২০২০, ১৬:৫৬

করোনাভাইরাসের মহাবিপর্যয়ের মধ্যে লকডাউন শিথিল করে সরকার দেশে ভয়ংকর অবস্থা তৈরি করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। আজ মঙ্গলবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ অভিযোগ করেন। বিএনপির করোনা পর্যবেক্ষণ সেল থেকে পাওয়া সবশেষ তথ্য তুলে ধরার জন্য এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার যতটুকু ত্রাণ দিয়েছে তা সব দলীয় নেতা-কর্মীদের তালিকা করে দিয়েছে, শুধু দলীয় লোকদের ত্রাণ দেওয়া হয়েছে, সাধারণ মানুষ বা অন্য দলের লোকদেরকে ত্রাণ দেওয়া হয়নি।

 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, করোনার সংক্রমণ এখন ঊর্ধ্বমুখী। সরকার করোনা মোকাবিলায় সবদিক থেকে ব্যর্থ। সরকারি হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ ও ভেন্টিলেটর ব্যবস্থা অপ্রতুল। ৯০ ভাগ হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা নেই। হাসাপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের স্বাস্থ্যসুরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়নি। নিম্নমানের মাস্ক সরবরাহ করে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বিপদে ফেলে দিয়েছে সরকার। এখন তারা রোগীদের চিকিৎসা দিতে ভয় পাচ্ছে।

 

তিনি বলেন, সরকারের ব্যর্থতায় বিনাচিকিৎসায় মারা যাচ্ছে সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক, চিকিৎসক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। লকডাউন শিথিল করে দেশকে ভয়ংকর বিপজ্জনক অবস্থায় ফেলে দিয়েছে সরকার। দাম্ভিকতা ছাড়া তাদের আর কিছুই নেই। প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের অদূরদর্শিতা, সমন্বয়হীনতা, উদাসীনতা ও একগুয়েমি মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। সুতরাং করোনায় মৃত্যুর দায় সরকারকেই নিতে হবে।

 

তিনি বলেন, সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩৪৯ জনের, আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ হাজার ৮৭০ জন। কিন্তু জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এ সংখ্যা আরও ৪০ গুণ বেশি হবে। গণমাধ্যমের তথ্যমতে করোনা উপসর্গে এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছে প্রায় ১,১০০ জন।

 

দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, পর্যাপ্ত চিকিৎসা পাচ্ছে না করোনা আক্রান্তরা। অন্যান্য রোগে আক্রান্তরাও যথাযথ চিকিৎসা পাচ্ছে না। পথে, ঘাটে, বাসে, ফুটপাতে লাশ পড়ে থাকার খবর বের হচ্ছে। শাহবাগে লম্বা লাইন ধরে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করেও করোনা টেস্ট করাতে না পেরে সড়কেই ছেলে-মেয়ের চোখের সামনে প্রাণ হারিয়েছেন বৃদ্ধ।

 

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারঘোষিত ৪২টি সেন্টারের বেশ কয়েকটি সেন্টার কার্যকর নয়। যেসব সেন্টারে টেস্ট হচ্ছে তাও অপর্যাপ্ত। বিএসএমএমইউ হাসপাতালের সামনের সড়কে আগের রাতে লাইন ধরে রোগীরা শুয়ে আছে। তারপরও টেস্টের সিরিয়াল পাচ্ছে না। অন্যান্য হাসপাতালগুলোতেও একই অবস্থা। যে পরিমাণ টেস্ট হচ্ছে এর মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১৬ শতাংশ উঠেছে। যদি বেশি টেস্ট হতো তাহলে আক্রান্তের সংখ্যা আরও অনেক বেশি বেড়ে যেত।

 

করোনা আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে ঘুরেও ভর্তি হতে পাচ্ছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মৃত্যু হয়েছে বিনা চিকিৎসায়। তাহলে সাধারণ মানুষের অবস্থা কী হতে পারে? শুধু কিটের অভাবে করোনার টেস্ট করাতে পারছেন না আক্রান্ত রোগীরা। অথচ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর কিট অনুমোদন নিয়ে কত টালবাহানা চলছে।

 

ইত্তেফাক/এএম