বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

খালেদা জিয়াকে নিয়ে ‘মাইনাস’ ফরমুলা বন্ধ করুন: প্রধানমন্ত্রীর প্রতি রিজভী

আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ২০:১৭

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন মিডিয়ায় সূত্রবিহীন একটি খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, চারবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্যারোলে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছেন। এমনকি তারা তারিখও বলে দিচ্ছেন! কিন্তু বাস্তবতা হলো-বিএনপির কোনো সূত্র এমন কিছুই জানে না।’

তিনি বলেন, ‘সরকারপন্থি কয়েকটি মিডিয়া প্রতিদিন মনগড়া প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। এই প্রোপাগান্ডাগুলোর সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও জড়িত বলে ব্যাপক গুঞ্জন আছে। তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ তা নিয়ে এই মিডিয়াগুলো নিরব। প্যারোল নিয়ে সরকারি মিশন সাকসেসফুল করার জন্য ক্ষমতাসীনরা চতুর রাজনীতিতে লিপ্ত।’ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘বেগম জিয়া শারীরিকভাবে খুবই বিপর্যন্ত। হাত-পা নাড়তে পারছেন না। আর্থ্রাইটিসের ব্যাথার কারণে পা নাড়াতে পারছেন না। তাকে সুচিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। গতকালও চিকিৎসকরা বলেছেন তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসছে না। এই অবস্থায় তিনি চাচ্ছেন তার পছন্দমতো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে। কিন্তু এই অবৈধ সরকার তার জীবন হুমকির মুখে ফেলে সুদুরপ্রসারী স্বার্থ সিদ্ধির ষড়যন্ত্র অব্যহত রেখেছে। তার আইনজীবীরা বলেছেন, তাকে যে মিথ্যা সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে অন্যায়ভাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে তা সহজ জামিনযোগ্য। আইনি প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিক পথে জামিনে মুক্তি চান তিনি।

রিজভী প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন,খালেদা জিয়াকে নিয়ে ‘মাইনাস ফরমুলা’ বন্ধ করুন। ওয়ান ইলেভেনের সরকার মাইনাস-টু ফরমুলা বাস্তবায়ন করতে চেয়েছিল। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন কঠোর ভূমিকায় তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। তারা সফল হলে আজ আপনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না। প্যারোলের নামে মাইনাসতত্ত্বের অশুভ চক্রান্ত করে লাভ হবে না। তার জামিনে আর বাধা দিবেন না। আদালতে হস্তক্ষেপ বন্ধ করুন। আদালতের ওপর থেকে অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধ হলেই আমাদের নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন আইনী প্রক্রিয়ায় জামিনে বেরিয়ে আসবেন। আইনকে তার নিজের গতিতে চলতে দিন। অপতৎপরতা বন্ধ না করলে আখেরে আপনাদেরকে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে।

তিনি বলেন, দেশে চলছে এক চরম নৈরাজ্য এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি। খুন-ধর্ষণ-লুটপাটে মত্ত হয়ে পড়েছে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা। পুলিশ প্রশাসনের যেসব কর্মকর্তা রাতের ভোটে ব্যালট বাক্স ভরে দিয়ে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে তারাও বেপরোয়া হয়ে গেছেন। সরকারকে পরোয়া করছে না।

রিজভী বলেন, ‘নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। নুসরাতের পরিবারকে ডেকে প্রধানমন্ত্রী ধরিয়ে দিলেন একটি ব্যাংকের নিয়োগপত্র। জনমনে ধারণা, দলীয় নেতাকর্মীদের বাচানোর সনদই হচ্ছে এই নিয়োগপত্র। যাতে করে পরিবারটিকে নিয়ন্ত্রণে রেখে মামলার গতি বদল করা যায়।’

আরও পড়ুনঃ দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশি যুবককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা

সংবাদ সম্মেলনে দলটির ভাইস-চেয়ারম্যান বেগম সেলিমা রহমান, আহমেদ আযম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক শামিম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ইত্তেফাক/নূহু