শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

এই সরকার মিয়ানমারের ইচ্ছা পূরণে কাজ করছে: ফখরুল

আপডেট : ২৪ আগস্ট ২০১৯, ২৩:০৮

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় সরকার সম্পূর্ণভাবেই ব্যর্থ হয়েছে। মিয়ানমারের ইচ্ছা পূরণে সরকার কাজ করছে বলেই রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসেছে দুই বছর হলো। কিন্তু এখনও একজন রোহিঙ্গাকে সেখানে পাঠাতে পারেনি সরকার। 

তিনি বলেন, রোহিঙ্গার বিষয়ে সরকার সম্পূর্ণভাবে মিয়ানমারের কাছে নতি স্বীকার করেছে, তারা (মিয়ানমার) যে ফর্মূলা দিয়েছে, সেই ফর্মূলার কাছে নতি স্বীকার করেছে। সর্বশেষ যে সাড়ে তিন হাজার রোহিঙ্গা শরাণার্থী প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা হয়েছিল, তার সমাধান হয়নি অর্থাৎ রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব, তাদের নিরাপত্তা, তাদের নিজের সম্পত্তির মালিক হয়ে বাসভূমিতে ফিরে যাওয়া, তাদের সম্পত্তির মালিক হওয়া-এই বিষয়গুলো নিশ্চিত হয়নি বলেই আস্থার অভাবে রোহিঙ্গারা চলে যায়নি।

দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে শনিবার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আমরা শুরুতেই বলেছি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য। কিন্তু এই সরকার এতে কোন সাড়া দেয়নি। দুই বছর পরে এসে একজন রোহিঙ্গাকেও তারা ফেরত পাঠাতে পারেনি। মূলত এই সরকার মিয়ানমারের কথা মতো কাজ করছে এবং তাদের ফর্মুলা বাস্তবায়ন করছে। মোটকথা মিয়ানমারের ইচ্ছাগুলো এই সরকার বাস্তবায়ন করছে।

তিনি আরও বলেন, ২১ আগস্ট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং কিছু পত্রিকা তারেক রহমানকে জড়িয়ে যেসব কথা বলছেন এগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা এখনো বলছি ২১ আগস্টের ঘটনা দেশের জন্য একটি নিকৃষ্ট ঘটনা। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।ফখরুল বলেন, সম্প্রতি সরকারের একজন মন্ত্রী বলেছেন ২১ আগস্টের ঘটনার পর তৎকালীন বিএনপি সরকার কোন উদ্যোগ নেয়নি। ওনার একথা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ওই সময় এই ঘটনা নিয়ে কাজ করার জন্য দুটি বিদেশি সংস্থা আসলে আমরা তাদের সঙ্গে কাজ করার উদ্যোগ গ্রহণ করলেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোন আগ্রহ দেখানো হয়নি। আমরা এফবিআইকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছি।কিন্তু আওয়ামীলীগ তদন্তে সহযোগিতা করেনি। মুফতি হান্নানকে গ্রেফতার আমরাই করেছি।

আরো পড়ুন: ফরিদপুরে যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনা: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮

আগামী পহেলা সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনে র‌্যালি করার কথা থাকলেও এটা হবে পরের দিন। আর ২ সেপ্টেম্বরের আলোচনা হবে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিন বিকেল ৩টায়। এছাড়া খালেদা জিয়া সুস্থতা এবং তার জামিনের বিষয়েও আলোচনা হয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে।

দলের স্থায়ী কমিটির আগামী বৈঠক এগিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর আগে, প্রতি সপ্তাহে এই কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হতো। এখন থেকে স্থায়ী কমিটির পরবর্তী বৈঠকগুলো ১৫ দিন পরপর বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে আগামী ২৮ আগস্ট (বুধবার) ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও বাংলাদেশের ভূমিকা’ শীর্ষক একটি সেমিনার আয়োজন করবে বিএনপি।

স্থায়ী কমিটির দুই ঘণ্টার বৈঠকে মহাসচিব ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

ইত্তেফাক/এমআই