শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ঢাকা সিটি নির্বাচন: দলীয় প্রতীকে অংশ নেবে বিএনপি

আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:১২

আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে অংশগ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। গত ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘রাতে ভোট ডাকাতি’ হয়েছে অভিযোগ করে দলটি বর্তমান সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচনে যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিলেও সেই অবস্থান থেকে সম্প্রতি সরে এসেছে। গত শনিবার দলের স্থায়ী কমিটির সভায় আগামী ১৪ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় ৮ উপজেলাসহ পরবর্তীতে সব স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধূরী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ন্যূনতম স্পেস দিচ্ছে না সরকার। নির্বাচনে নেতা-কর্মীরা মাঠে সক্রিয় থাকতে পারে। তাই সামনে যত প্রতিকূল পরিবেশই আসুক, সব নির্বাচনেই অংশ নেব আমরা।’

দলের একজন সিনিয়র নেতা বলেন, ভোট বর্জনে নেতা-কর্মীদের নিস্ক্রিয় না করে, নির্বাচনের রাজনীতিতে দলকে সক্রিয় রাখতে চান হাইকমান্ড। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচন বর্জন করে আমাদের লাভ হয়নি। যেহেতু সংগঠনকে শক্তিশালী করে জাতীয় নির্বাচনের দাবি আদায়ে আন্দোলনে যেতে হবে, তাই নির্বাচন বর্জন করে সংগঠনকে দুর্বল করার সিদ্ধান্ত আর বিএনপি নিতে চায় না।

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা উপজেলাসহ স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতে অংশগ্রহণের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কৌশলগত কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে:এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচন ঘিরে আগে থেকেই মাঠে সক্রিয় রয়েছেন বিএনপির অন্তত ডজন খানেক সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী। উত্তরের চেয়ে দক্ষিণে প্রার্থীর ছড়াছড়ি। দলের নীতি-নির্ধারকরা নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঠে থেকে নানা সামাজিক কাজ করতে পরামর্শ দিয়েছেন। নির্বাচন সামনে রেখে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠ গোছানো শুরু করছেন। ইতোমধ্যে দুই সিটিতেই ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টিতে বিভিন্ন বাসাবাড়ি, দোকানপাট, বিপণিবিতানে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে লিফলেট বিতরণ করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ২ সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রায় সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের কর্মী-সমর্থকদের মাধ্যমে নিজেদের নামে ব্যানার-প্লাকার্ড নিয়ে শো-ডাউন করেছেন।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণে কারা মনোনয়ন পেতে পারেন তা নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোচনা-তর্ক-যুক্তি চলছে। তবে সবার মাঝে একটিই প্রশ্ন- নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি-না তা নিয়ে। ঢাকা উত্তরে বিএনপির সহ-সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টুর পুত্র তাবিথ আউয়াল এবং দক্ষিণে অবিভক্ত ঢাকা সিটির সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনের নামই আলোচনার পাদপ্রদীপে রয়েছে। তাবিথ আউয়াল ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা সিটি উত্তরের ভোটে অংশ নিয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনিসুল হক বিজয়ী হন। ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন মির্জা আব্বাস। এবার তিনি তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাসকে প্রার্থী করতে আগ্রহী বলে জানা যায়।

দলের সূত্রগুলো বলছে, দক্ষিণে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনের সম্ভাবনা বেশি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন পেলেও পরে দলের নির্দেশে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের এক প্রার্থীকে ছাড় দিয়ে বসে পড়তে হয় তাকে। তখন দলের পক্ষ থেকে সিটি মেয়র হিসেবে তাকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়।

এদিকে ঢাকা উত্তরে তাবিথ আউয়াল ছাড়াও সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে লবিয়িং করছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সভাপতি এম এ কাইয়ুম, যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, বিএনপি নেতা আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, ২০ দলীয় জোটের শরিক এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম প্রমুখ। 

আরও পড়ুন: তিন মাস পর মেঘনায় তেল যমুনা এখনো শূন্য

ঢাকা দক্ষিণে আরো যারা প্রার্থী হতে প্রচারণা ও লবিয়িং করছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন: বিএনপির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী সোহেল, সাবেক ডেপুটি মেয়র আবদুস সালাম, নাসির উদ্দিন পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আক্তার কল্পনা, ব্যবসায়ী টিপু সুলতান, সাবেক কমিশনার কাজী আবুল বাশার প্রমুখ।

ইত্তেফাক/নূহু