নির্বাচনের মাত্র একদিন আগে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কাউন্সিল বৃহস্পতিবার স্থগিত করেছে আদালত। একইসঙ্গে মির্জা ফখরুলসহ দশ নেতাকে আদালত শোকজ করেছে। আমান উল্লাহ আমান নামে সাবেক এক নেতার আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার ঢাকার ৪র্থ সহকারি জজ আদালতের বিচারক নুসরাত জাহান বীথি এই স্থগিতাদেশ দেন।
কাউন্সিল অস্থায়ী স্থগিতের পাশাপাশি এ ব্যাপারে বিএনপিকে সাতদিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়েছে। রাতেই আদালতের রায়ের কপি বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে কেউ তা গ্রহণ করেননি। আবেদনকারী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক ধর্মবিষয়ক সহ-সম্পাদক বলে জানা গেছে। দিকে আবেদনকারী আমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আদালতের এমন নির্দেশ শোনার পর বিএনপিসহ দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়। কার ইন্ধনে এ স্থগিতাদেশ চাওয়া হল- সেটাই এখন আলোচনার মূল বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইন্ধনদাতাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
আরও পড়ুন : ১ ডিসেম্বর রুয়েটের পঞ্চম সমাবর্তন
এদিকে আদালতের স্থগিতাদেশের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে জরুরি বৈঠকে বসেন নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ বৈঠকে লন্ডন থেকে স্কাইপিতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও যোগ দেন। রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা সময় বৈঠক চলছিল।
জানা গেছে, আবেদনকারী আমানের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা। তিনি বিএনপি মহাসিচব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দশজনকে বিবাদী করেছেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আদেশে বলেন, নোটিশপ্রাপ্তির সাতদিনের মধ্যে বিবাদীগণকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। এ সময় পর্যন্ত কাউন্সিল স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়।
দীর্ঘ ২৭ বছর পর শনিবার ছাত্রদলের ৬ষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কাউন্সিল উপলক্ষে সবধরনের প্রস্তুতি গুছিয়ে আনেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে এক ধরনের উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছিল। সারা দেশ সফর শেষে এখন সংগঠনের শীর্ষ দুই পদের প্রার্থীরা নির্ঘুম রাত কাটান। সারা দেশ থেকে কাউন্সিলরাও এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কাউন্সিলরদের কার্ড বিতরণ করা হয়।
এদিকে নির্বাচন স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ফজলুল হক মিলনকে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে আছেন শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও আজিজুল বারী হেলাল।
পোলিং অফিসারের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এবিএম মোশাররফ হোসেন, শফিউল বারী বাবু ও সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে। ছাত্রদলের কাউন্সিলে ৯ জন সভাপতি ও ১৯ জন সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সংগঠনটির সারা দেশের ১১৬টি ইউনিটের ৫৬৬ জন কাউন্সিলর রয়েছেন।
ইত্তেফাক/কেআই