বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ট্রেন দুর্ঘটনার পেছনে কোনো চক্রান্ত আছে কি না তদন্ত হবে

আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০১৯, ০১:০২

প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবে না। সকল চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ভেদ করেই বাংলাদেশ এখন সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। দেশের চলমান উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে অচিরেই দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে। দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে একটা মর্যাদার আসনে নিয়ে এসেছি। আমি জানি দেশের কিছু লোকের এটা পছন্দ হয় না। একটি চক্র আছে যারা নানাভাবে একটা ঘটনা ঘটিয়ে দেশের বিরুদ্ধে একটা বদনাম করতে পারলেই বেশি খুশি হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে বিরোধী দলের নেতার বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দুর্ঘটনা দুর্ঘটনাই। কুয়াশার কারণে বি. বাড়িয়ার কসবায় রেল দুর্ঘটনায় কিছু মানুষ মারা গেছে। উল্লাপাড়ায় আরেকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিছু মানুষ আহত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার পেছনে কোনো চক্রান্ত বা দুরভিসন্ধি আছে কি না, তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। কারণ দেশে একটা ঘটনা ঘটার পর পরই আরো ঘটনা ঘটে।

পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের মাত্র একটি রাজ্য ছাড়া গোটা ভারতে পেঁয়াজ ১০০ রূপি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ভারতও পেঁয়াজ আমদানি করছে। এক্ষেত্রেও আমরা বসে নেই। মিশর, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমরা পেঁয়াজ আমদানি করছি। অল্পদিনের মধ্যেই মিশর ও তুরস্ক থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ চলে আসবে। আসলেই তা জেলায় জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে, টিসিবি ট্রাকে করে তা বিক্রি করবে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে গবেষকরা পেঁয়াজ যাতে বারো মাস হতে পারে, সেই বীজ উদ্ভাবন করেছে। এই বীজ বাজারজাত করা হবে, তখন পেঁয়াজের জন্য কারো মুখাপেক্ষী হতে হবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দারিদ্র্য ২১ ভাগে নামিয়ে আনতে পেরেছি, আরো কমাব। বাংলাদেশে দারিদ্র্য বলে কিছু থাকবে না। আর চলমান দুর্নীতি-সন্ত্রাস-মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। সন্ত্রাস-মাদকের দুষ্টচক্র থেকে সমাজকে আমাদের রক্ষা করতেই হবে। কোন দল করে আমরা দেখতে চাই না, অপরাধী অপরাধীই। কাউকে ছাড় দেইনি। এটা আমার নীতির ব্যাপার। সমাজকে দুষ্টচক্র থেকে রক্ষা করতেই হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আমরা পালন করব ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে। বাংলাদেশ বিজয়ের পতাকা নিয়েই বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার আসার পর সবার যত বেতন বাড়িয়েছি, অন্য কোনো সরকার কোনোদিন বাড়াতে পারেনি। শ্রমিক থেকে শুরু করে শিক্ষক পর্যন্ত সবার বেতন অনেকগুণ বাড়িয়েছি। আড়াই হাজারের মতো স্কুল-কলেজকে এমপিওভুক্ত করে দিয়েছি। শিক্ষকদের বেতন গ্রেড বাড়ানো হয়েছে, এখন বেতন কিন্তু অনেক বেশি। পরমাণু বিদ্যুত্ কেন্দ্র ও রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত্ কেন্দ্র প্রসঙ্গে সংসদ নেতা বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুেকন্দ্র নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে, সকল বর্জ্য রাশিয়াই নিয়ে যাবে। তিনস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। এছাড়া রূপপুরের পর দক্ষিণে একটি দ্বীপ খুঁজছি, সেখানেও আরেকটি পরমাণু বিদ্যুেকন্দ্র নির্মাণ করব। আর রামপালের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুেকন্দ্র থেকে সুন্দরবনের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার কোনোই আশঙ্কা নেই। এটা সবচেয়ে আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি বিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, একজন ভিসি নিয়োগ দিলেই তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। শিক্ষকরা তাদের স্বার্থের জন্য ছাত্রদের ব্যবহার করবে কেন? শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশুনা বন্ধ করে ছাত্রদের লেখাপড়া নষ্ট করা হচ্ছে। অনেক কষ্ট করে আমরা সেসনজট বন্ধ করেছি। কিন্তু চক্রান্ত করে সেটা আবার সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। মুষ্টিমেয় কয়েকজনের জন্য শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করতে দিতে পারি না, আমরা দেব না। আইনেই রয়েছে, কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে তা প্রমাণ হবে, প্রমাণ করতে না পারলে অভিযোগকারীদেরও শাস্তির বিধান আছে। এক্ষেত্রেও আইন তার নিজস্ব গতিতেই চলবে।