শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

করোনায় মৃত্যুর সঠিক তথ্য নেই রামেক হাসপাতালে!

আপডেট : ১২ জুন ২০২১, ২২:১৭

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনায় মৃত্যুর সঠিক সংখ্যা কেউ জানে না! উপসর্গে মৃতদের শরীরে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সব উপসর্গ থাকছে। কিন্তু নমুনা পরীক্ষার আগেই মৃত্যু হওয়ায় তাদের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হচ্ছে না। রামেক হাসপাতালে প্রতিদিনই এমন মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা পজিটিভ ও উপসর্গে মৃত্যুদের তালিকাও করছে। ফলে মৃতরা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

উল্লেখ্য, করোনার প্রথম ঢেউয়ে উপসর্গে মৃতদের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হতো। তবে কয়েক মাস ধরে সেটি আর করা হচ্ছে না। মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার পর উপসর্গে মৃতদের নমুনা নেওয়া হচ্ছে না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, জনবল সংকটের কারণে এখন উপসর্গে মৃতদের নমুনা পরীক্ষা করা যাচ্ছে না। তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হলে করোনায় মৃতের সঠিক হিসাব পাওয়া যেত।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত মার্চে রামেক হাসপাতালে করোনার উপসর্গে ২৯ জন, এপ্রিলে ৪৪ জন, মেতে ৭২ জন ও জুনের প্রথম ১১ দিনে ৪২ জন মারা যায়। চলতি জুনের ১১ দিনে রামেক হাসপাতালে করোনা ইউনিটে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান ১০৭ জন। এর মধ্যে ৬৩ জন মারা যান করোনা শনাক্তের পর। বাকি ৪২ জনের উপসর্গ ছিল। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত আট জন মারা যান উপসর্গে। ফলে মার্চ থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ১৮৭ জনের মৃত্যু করোনায়, নাকি অন্য কারণে, তা আর জানা সম্ভব নয়।

রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, করোনার উপসর্গে মৃতদের নমুনা পরীক্ষা করে অনেকের পজিটিভ রিপোর্ট এসেছিল। তাই তারা ধরেই নেন যে, তারা করোনায় মারা গেছেন। তবে করোনা পরীক্ষার পর পজিটিভ অবস্থায় যারা মারা যায়, তাদের সঙ্গে উপসর্গে মৃতদের হিসাব রাখা হয় না। তবে উপসর্গে মৃতদেরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন করতে বলা হয়।

এদিকে, করোনায় মৃতদের তালিকা সিভিল সার্জন ও বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের অফিস হয়ে চলে যাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। অধিদপ্তর প্রতিদিনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঐ তথ্যই পাঠায় গণমাধ্যমে। কিন্তু উপসর্গে মৃতদের নমুনা পরীক্ষা না হওয়ায় করোনায় প্রকৃত মৃতের সংখ্যা উঠে আসছে না। এ নিয়ে কোনো নির্দেশনাও নেই বলে সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন রাজশাহী বিভাগের উপস্বাস্থ্য পরিচালক আনোয়ারুল কবীর। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার স্বীকার করেন, রামেকসহ বিভিন্ন হাসপাতাল এবং সিভিল সার্জনের কার্যালয় শুধু করোনায় মৃতদের সংখ্যা জানায়। উপসর্গে মৃতদের তথ্য পাঠায় না। রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম ইয়াজদানী বলেন, রামেক হাসপাতালে লোকবল সংকট আছে। এ কারণে পিসিআর ল্যাবই চালানো হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী দিয়ে।