শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ফুল

শোভাবর্ধক ও ঔষধিগুণে সমৃদ্ধ অশোক

আপডেট : ২৮ মার্চ ২০২০, ২১:২৪

গ্রামের পথ ধরে হাঁটছিলাম। চলার পথে ফুল দেখে গাছের সামনে দাঁড়াই। প্রকৃতি আমাদের জন্য সদয়। গোধূলি লগ্নে তড়িঘড়ি করে ক্যামেরাবন্দি করি অশোক ফুলের ছবি।

অশোক মাঝারি আকৃতির ছায়া-সুনিবিড় চিরসবুজ বৃক্ষ। উচ্চতা ৩০-৩৫ ফুট। বিস্তৃত ডালপালা, ঘন পল্লবময়। গাছের কাণ্ড মুকুট আকৃতি। বাকল মসৃণ ঘন বাদামি ও ধূসর বাদামি রঙের। পাতা ঘন সবুজ, চকচকে। এক ফুট লম্বা পাতায় ৩ থেকে ৭ জোড়া খুদে পাতা। নতুন পাতা তামাটে রঙের ও খুবই নরম। ফুল ফোটার প্রকৃত মৌসুম বসন্তকাল। শীতকালেও অল্প সংখ্যায় ফুল ফোটে। এই ফুল ফোটে গাছের কাণ্ড থেকে।

ফেব্রুয়ারি-মার্চে কমলা, লাল রঙের ফুল যখন থোকায় থোকায় ফোটে তখন বর্ণ ও গঠনে আকর্ষণীয়। সহজেই দৃষ্টি কাড়ে। ফল শিম জাতীয় মাংসল ও লাল। পাকলে স্বাদে-গুণে অনেকটাই তেঁতুলের মতো টক।

গাঁও-গ্রামের বাগানবাড়ির ফটকে এবং শহরেও শোভাবর্ধনের জন্য লাগানো হয়। গাছটি দুর্লভ—সব জায়গায় পাওয়াও দুষ্কর। সোনারগাঁয়ের রঘুভাঙ্গা গ্রামের কড়ই বাগানে ও ঢাকার বড়ো বড়ো উদ্যানে দেখা যায়। চৈত্র মাসের শুক্লাষষ্ঠীতে হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই ফুল পূজনীয় এবং পবিত্র বলে গণ্য। বিশেষ করে গাছের বাকল আয়ুর্বেদী ও ইউনানি ওষুধ তৈরিতে ব্যাপক ব্যবহার হয়। শুকনো ফুল ও ছালের রস রক্ত আমাশয়ে এবং প্রস্রাবের ব্যাধিতে কাজে লাগে। পানের সঙ্গে অশোকের বীজ খেলে শ্বাসকষ্ট কমে।

আশোক ইয়েলো সারাকে গোত্রের বৃক্ষ। আদি নিবাস মিয়ানমার। ভারত এবং বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম ও চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে রাজ অশোক এবং স্বর্ণ অশোক নামে আরো দুই রকমের অশোক গাছ দেখা যায়। বৈজ্ঞানিক নাম Saraca haipingensis। অশোকের একটি প্রজাতির ফলের রং হলুদ। এটি শোভাবর্ধন যেমন করে, তেমনি ঔষধিগুণেও সমৃদ্ধ।