আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উদ্যাপন অনুষ্ঠানে বক্তারা
ইত্তেফাক রিপোর্ট
বাল্যবিবাহ এবং যৌতুক এখনো সমাজে মেয়েশিশুদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা। এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে। কন্যাশিশুদের সমঅধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিতকরণে লিঙ্গবৈষম্য দূর করতে হবে। পাশাপাশি তাদের অবস্থা ও অবস্থান পরিবর্তনে পরিবার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সমাজ ও রাষ্ট্রের সমন্বিত প্রচেষ্টা থাকতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ‘আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘মেয়েশিশুদের শক্তি-মুক্ত, অদম্য; দূর করবে জেন্ডার বৈষম্য’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ‘রুম টু রিড বাংলাদেশ’ আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উদ্যাপনের আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, কন্যা সন্তানদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের বিশেষ নজর দিতে হবে। এক্ষেত্রে নারীর পাশাপাশি পুরুষদেরও এগিয়ে আসতে হবে এবং অতিরিক্ত দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি বলেন, মেয়েদের সেভাবেই গড়ে তুলতে হবে, যাতে করে তারা সব পেশার কাজ করতে পারে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি আমাদের কন্যা সন্তানদের শারীরিকভাবেও সক্ষম হতে হবে। আমাদের কন্যাশিশুরা এখনো অপুষ্টিতে ভুগছে, এটা শুধু যে অর্থনৈতিক দৈন্যদশার কারণেই হচ্ছে, তা নয়; অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় খাদ্যাভ্যাসও এক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করে। সেক্ষেত্রে আমাদের খাদ্যাভ্যাসের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।
সভা-প্রধানের বক্তব্যে ‘রুম টু রিড বাংলাদেশ’ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর রাখী সরকার বলেন, গত দশ বছরে রুম টু রিড বাংলাদেশ ২০০৯ সাল থেকে মেয়েশিশু শিক্ষা সহায়তা কার্যক্রমের আওতায় ৫০০০ মেয়েশিশুকে সহায়তা করেছে। এখন পর্যন্ত সফলতার সঙ্গে ৭৫০ মেয়েশিশু মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেছে এবং বর্তমানে তারা উচ্চশিক্ষায় অধ্যয়নরত আছেন।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারপারসন লাকী ইনাম বলেন, বাল্যবিবাহ এবং যৌতুক এখনো আমাদের সমাজে মেয়েশিশুদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা। এক্ষেত্রে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে রুম টু রিড তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে মেয়েশিশুদের সহায়তা করছে। এটা প্রসংশনীয়।
উল্লেখ্য, রুম টু রিড একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংগঠন যা বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৬টি দেশে শিশুদের শিক্ষা সহায়তায় কাজ করে আসছে। সংগঠনটি ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে ‘মানসম্মত সাক্ষরতা’ এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ‘মেয়েশিশুদের শিক্ষা সহযোগিতা কার্যক্রম’—এর আওতায় মেয়েশিশুদের শিক্ষা ও জীবন-দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছে। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন পতাকাবাহী বিশ্বজয়ী প্রথম বাংলাদেশি নারী নাজমুন নাহার, অভিনয় শিল্পী বন্যা মির্জা প্রমুখ। আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে মেয়েশিশুদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।