আহসান জোবায়ের, জবি সংবাদদাতা
পুরান ঢাকার রায়সাহেব মোড় থেকে জনসন রোড ধরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দিকে কয়েক পা এগুলেই রাস্তার পশ্চিম পাশে মিলবে বিউটি লাচ্ছি ও ফালুদার দোকান। ১৯২২ সালে স্থানীয় আব্দুল আজিজের হাত ধরে যাত্রা শুরু বিউটি লাচ্ছির। প্রথমদিকে এ দোকানটি ছিল শুধু সামিয়ানা টাঙিয়ে দেওয়া একটি ছোটো টং দোকান। সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে জনপ্রিয়তার সঙ্গে বদলেছে এর কাঠামোগত দিক। আর শুরু থেকেই গুণগত মান আর নির্ভেজাল লাচ্ছি তৈরি হওয়ায় অল্প সময়ের মধ্যেই পুরান ঢাকাবাসীর কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ‘বিউটি লাচ্ছি’। ধীরে ধীরে সবার কাছে পরিচিত আর পছন্দের একটি খাবার হিসেবে সমাদৃত হয়ে ওঠে।
জানা যায়, এখানে প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ গ্লাস লাচ্ছি-শরবত বিক্রি হয় গরম আবহাওয়ার ওপর ভিত্তি করে। শরবত ১৫ টাকা, লাচ্ছি ৩০ টাকা আর স্পেশাল বিট লবণের লাচ্ছি ৪০ টাকা। এখানে বানানো ফালুদাও সবার পছন্দের। আপেল, আঙুর, আনার, খেজুর, কলা, দই, মালাই, আইসক্রিম, চিনির সিরা, নুডলস, সাবুদানা, পেস্তা বাদাম আর ঘি দিয়ে বানানো হয় এ ফালুদা। স্পেশাল ফালুদা ৮০ টাকা আর নরমাল ৬০ টাকা। দিনে দেড়শ থেকে আড়াইশ প্লেট দোকানেই বিক্রি হয়। সেই সঙ্গে রয়েছে পার্সেলের ব্যবস্থাও।
ক্যাশিয়ার জাকির হোসেন বলেন, এখানে কর্মপরিবেশ অনেক ভালো। যারা আসেন তারা সহজে এ প্রতিষ্ঠান ছাড়তে চান না। নিজেই পরিচয় করিয়ে দিলেন লাচ্ছি মাস্টার মো. আলাউদ্দিনের সঙ্গে। যিনি ৫০ বছর ধরে এখানে কর্মরত।
প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান কর্ণধার মো. জাবেদ হোসেন জানান, পুরাতন হওয়ায় বিশেষ করে পুরান ঢাকায় এবং সারাদেশে বিউটি লাচ্ছির ভালো নামডাক রয়েছে। সরকারি, বেসরকারি প্রোগ্রাম, বিয়ে, হলুদ, জন্মদিনসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাদের লাচ্ছি-ফালুদা বানাতে ভাড়া করে নিয়ে যাওয়া যায়। আজিজপুত্র আব্দুল গাফ্ফার মিয়া তার বাবার মৃত্যুর পর হোটেলের দায়িত্ব নেন। আর ২০০১ সালে তার মৃত্যুর পর থেকে বসেন তার দুই ছেলে মো. জাবেদ হোসেন ও মো. মানিক মিয়া। বর্তমানে তাদের হাতেই পূর্বপুরুষের ঐতিহ্য ধারণ করে এগিয়ে যাচ্ছে পুরান ঢাকার বিউটি লাচ্ছি।