শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সুযোগের অভাবে আটকে আছে সম্ভাবনাময় গবেষণা

আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২০, ২২:১৫

করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক

আরফিন শরিয়ত

ব্যাকটেরিয়া ও প্রোটোজোয়াধর্মী জীবাণু নিয়ে গবেষণা করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি ও ফার্মাকোলজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রহমান এবং শিক্ষার্থী তাসমিয়া আহমেদ। ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও প্রোটোজোয়া ধ্বংস করতে প্রতিষেধক তৈরি করাই ছিল গবেষকদের উদ্দেশ্য। এই দুই গবেষক ধারণা করছেন, তাদের তৈরি প্রতিষেধক করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং তা ভালো কাজ করবে বলে আশাবাদী তারা। চীন থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে নিটাজক্সানাইড প্রতিষেধকটি করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করছে এমন তথ্য প্রকাশের পর তারা এমনটি ধারণা করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষকরা বাজারে চলমান নিটাজক্সানাইড সদৃশ (অ্যানালগ) সম্পূর্ণ পৃথক চারটি মলিকিউল এর সিনথেসিস করেন। এই মলিকিউলউগুলো নিটাজক্সানাইড এর চাইতেও অনেক বেশি পরিমাণ কাজ করে বলে দাবি তাদের।

দুই গবেষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন জীবাণুর বিরুদ্ধে তাদের দুটি মলিকিউল নিটাজক্সানাইড এর চাইতেও বেশি কার্যকরী। কম্পিউটেশনাল অ্যানালাইসিস করেও তারা একই ধরনের ফল পান। সম্প্রতি বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল ‘ন্যাচার’ এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে নিটাজক্সানাইড করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকরী বলে দাবি করা হয়। 

চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সাইন্সেস এর মানলি ওয়াং, জিংলোও ইয়াং, বেইজিং ইনস্টিটিউট অব ফার্মাকোলজি ও টক্সিকোলজির রুইউয়ান চাও, উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির লেইকি জাং এর যৌথ গবেষণায় একটি কার্যকর অ্যান্টিভাইরাল পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। চার জনের যৌথ গবেষণায় পাওয়া অ্যান্টিভাইরালের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই গবেষকের গবেষণায় পাওয়া প্রতিষেধকের মিল রয়েছে। তারা আশা করছেন, সঠিকমাত্রায় প্রয়োগ করতে পারলে এটি ভালো ফল দেবে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুর রহমান বলেন, আমরা কাজটি করেছি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের অনেক পূর্বে। আমাদের আবিষ্কৃত মলিকিউল প্রাণীর উপর প্রয়োগ করে দেখতে হবে কাজ করে কি না। ফল পজেটিভ হলে তখন আমরা কাজ শুরু করতে পারব। কিন্তু দেশে সেই সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ভাইরাস নিয়ে কাজ করার মতো সে ধরনের উপাদান, ল্যাব দেশের কোথাও নেই। এটা পৃথিবীর খুব কম সংখ্যক দেশে রয়েছে। এজন্য দেশের বাইরে করোনা ভাইরাস নিয়ে কাজ করে এমন একটি গ্রুপের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করছি। এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, নিটাজক্সানাইড অ্যানালগ থেকে এটা ভিন্ন অ্যানালগ। এটি আমরা মলিকিউলার পর্যায়ে ট্রাই করেছি। এখন আমাদের অ্যানিমেল ট্রায়ালে যেতে হবে। কাজ করার জন্য সরকারি সহায়তা পেলে আমরা কাজটা এগিয়ে নিতে পারব।