ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতবর্ষ জন্মদিনের আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, আমাদের সমাজে আজও অন্ধকার রয়ে গেছে। বিদ্যাসাগরের মন্ত্রে ব্রতী হয়ে সমাজ থেকে অন্ধকার দূর করতে হবে। মানুষের জন্য নিজেকে নিয়োজিত করতে বিদ্যাসাগর আজও আমাদের পথ দেখান।
বক্তারা বলেন, বাঙালির নবজাগরণের প্রধান পুরুষ ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। বাঙালির জাগরণে, বিকাশে তার ভূমিকা অতুলনীয়। তিনিই বাংলা গদ্যের প্রথম সার্থক রূপকার। বাংলা গদ্যকে সরল ও আধুনিক করার ক্ষেত্রে তার অবদান অতুলনীয়। বিশেষ করে নারীদের দুর্গতির যুগে তিনি নেমেছিলেন উদ্ধারকর্তার ভূমিকায়। রক্ষণশীল হিন্দু সমাজের প্রচণ্ড বিরোধিতা উপেক্ষা করে বিধবা বিবাহ চালু করেছিলেন, রোধ করেছিলেন বহু বিবাহ।
বাঙালির কিংবদন্তি শিক্ষাবিদ ও সমাজ সংস্কারক পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মদিন উপলক্ষ্যে ‘একুশ শতকের বাঙালির হূদয়ে বিদ্যাসাগর’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় জাদুঘর। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মহুয়া মুখোপাধ্যায়। বিশেষ অতিথি ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিত্ ঘোষ। সভাপতিত্ব করেন জাতীয় জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সঞ্চালনা করেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান।
কে এম খালিদ বলেন, ব্রিটিশ ভারতে উপনিবেশ আমলে দৃঢ় মনোবল নিয়ে তিনি এদেশের মানুষের শিক্ষা, নারী শিক্ষা সর্বস্তরে চালু করেছিলেন। আজকে যে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা আমরা দেখি তা প্রবর্তন করেছিলেন বিদ্যাসাগর। তিনি যেভাবে সারা জীবন মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন তা আজও অনুকরণীয়।
অধ্যাপক ড. বিশ্বজিত্ ঘোষ, তিনি বুঝেছিলেন নারী যদি শিক্ষিত না হয় জাতি শিক্ষিত হবে না। নারী শিক্ষা, বিধবা নারীদের বিবাহ, বহু বিবাহ রদ করতে তিনি মরণপণ লড়াই করে তা বহু বিবাহ বন্ধ করতে সক্ষম হন, বিধবা বিবাহও প্রচলন করতে পেরেছিলেন।
আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মদিন এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এই ২০০ বছর পরেও তিনি যে স্মরণীয়, বরণীয় তার মূল কারণ তার অবদান। বাংলার নবজাগরণের তিনি অন্যতম প্রধান পুরুষ। যখন মেয়েদের ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হয় না—সেই গ্রামের মেয়েদের জন্য তিনি ৩৫টি বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন।