বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ঈদযাত্রার পক্ষকালে প্রাণ ঝরেছে ২৪৭

আপডেট : ১২ জুন ২০১৯, ২২:১৭

যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের তথ্য

বিশেষ প্রতিনিধি

এবারের ঈদুল ফিতরে সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ২১২টি দুর্ঘটনায় ২৪৭ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে সড়কেই ঝরেছে ২২১ প্রাণ। এসব সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৬৬৪ জন। যাদের মধ্যে পঙ্গু হয়েছেন ৩৭৫ জন। গত ৩০ মে থেকে ১২ জুন পর্যন্ত ১৩ দিনে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৮টি জাতীয় দৈনিক, ৬টি আঞ্চলিক দৈনিক, ১০টি অনলাইন নিউজপোর্টালে প্রকাশিত সংবাদ এবং জাতীয় পঙ্গু হাসপাতালের তথ্য পর্যবেক্ষণ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনের দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জি এম কারুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দীন চৌধুরীসহ সংগঠনটির আরো কয়েকজন সদস্য।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এবার ঈদযাত্রায় সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ২১২টি দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সড়ক-মহাসড়কে ১৮৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, এরমধ্যে গাড়িচাপার ঘটনা ছিল ৫১টি, মুখোমুখি সংঘর্ষ ৮১টি, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ১৯টি এবং অন্যান্য কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৪টি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এসব দুর্ঘটনায় ৬৩টি ট্রাক-কাভার্ডভ্যান ও পিকআপ, ১৯টি কার-মাইক্রোবাস, ৩০টি নছিমন-করিমন, ভটভটি-ইজিবাইক, অটোরিকশা, ৬৪টি মোটরসাইকেল এবং ২৬টি অন্যান্য যানবাহন জড়িত ছিল। এসময় সড়ক দুর্ঘটনা ছাড়াও নৌপথের ৫ দুর্ঘটনায় চার ব্যক্তি নিহত এবং ১২ জন আহত হয়েছেন। আর ট্রেনে কাটা পড়ে পূর্বাঞ্চলে ১৩ জন এবং পশ্চিমাঞ্চলে ৯ জনসহ মোট ২২ জনের মৃত্যু হয়।

দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে বলা হয়, ঈদকেন্দ্রিক যাত্রীর চাপ, চালকদের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, বেশি ভাড়া আদায়, অদক্ষ চালকের হাতে দৈনিক চুক্তিতে যানবাহন ভাড়া দেওয়া, ফিটনেসবিহীন যানবাহনে যাত্রী বহন, মহাসড়কে অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, নছিমন-করিমন, মোটরসাইকেল অবাধে চলাচল, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, বিরতিহীন/ বিশ্রামহীনভাবে যানবাহন চালানো, যাত্রীদের ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা ইত্যাদি এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।

এসব সমস্যা সমাধানে ঈদ যাত্রায় সরকারি বেসরকারি সংস্থার স্টাফবাস যাত্রী বহনে ব্যবহার করা এবং প্রয়োজনে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে যানবাহন ভাড়া করার সুপারিশও করেছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।

পাশাপাশি যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ সড়ক বাঁক সোজা করা, যানবাহনের ফিটনেস পদ্ধতি ডিজিটাল করা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করা, হালকা গাড়ি চালানোর লাইসেন্স নিয়ে ভারি গাড়ি চালাচ্ছে এমন ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, মহাসড়কে নছিমন-করিমন জাতীয় গ্রামীণ যানবাহন বন্ধে সরকারি সিদ্ধান্ত শতভাগ বাস্তবায়ন, ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ করা এবং যাত্রী সচেতনতা বৃদ্ধি করারও সুপারিশ করেছে সংগঠনটি।