বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে সেই সংবিধানকে হত্যা করা হয়েছিল, যে সংবিধানে এক অসাম্প্রদায়িক, সমতাপূর্ণ ও মুক্তিচেতনায় একটি দেশ গড়ে তোলার আহ্বান ছিল। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুতে যে অপূরণীয় ক্ষতি হলো তার খেসারত আজো বাংলাদেশ দিচ্ছে। বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে সমৃদ্ধি অর্জন করলেও অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও সমতাপূর্ণ সমাজ গঠনের যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন তার থেকে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে গতকাল সোমবার মহিলা পরিষদের বেগম সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে শোক ও স্মরণ সভায় বক্তারা একথা বলেন। এই শোক ও স্মরণ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
সভাপ্রধানের বক্তব্যে মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নিহত সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্র থেকে জেলা শাখা কীভাবে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে প্রাণিত হতে পারে সে বিষয়ে কাজ করব। নারী আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলতে চাই—নারী সমাজ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে আর সেখান থেকেই আমাদের দায় এবং দায়িত্ব। স্বাধীনতার পরে প্রথম যে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস তা হঠাত্ হয়নি। দেশি ও বিদেশিদের সূক্ষ্ম পরিকল্পনা ছিল। একটি সংগ্রামের যে আদর্শিক লড়াই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধশক্তি সেই লড়াইকে থামাতে চেয়েছিল।
চিত্রশিল্পী হাশেম খান বলেন, আমাদের জাতির পিতা সাড়ে ৭ কোটি মানুষের জন্য লড়াই করে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র গড়ে তুলেছিলেন। তিনি শোককে শক্তিতে পরিণত করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাকে যারা হত্যা করেছে তারা জানে না যে, তিনি মৃত্যুর মধ্যদিয়ে কতটা শক্তিশালী হয়েছেন।
সভায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জন্য একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে সেই সংবিধানকে হত্যা করা হলো, যে সংবিধানে এক অসাম্প্রদায়িক, সমতাপূর্ণ ও মুক্তিচেতনায় একটি দেশ গড়ে তোলার আহ্বান ছিল। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুতে যে অপূরণীয় ক্ষতি হলো তার খেসারত আজও দিচ্ছে বাংলাদেশ। আজ বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে সমৃদ্ধি অর্জন করেছে; কিন্তু অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও সমতাপূর্ণ সমাজ গঠনের যে স্বপ্ন বঙ্গবন্ধু দেখেছিলেন তার থেকে বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে।
বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী মুহিত খান ও শিল্পী সুস্মিতা আহমেদ। কবিতা আবৃত্তি করেন লায়লা আফরোজ এবং আহ্কামউল্লাহ। স্মরণ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন—পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাখী দাশ পুরকায়স্থ ও সীমা মোসলেম, সংগঠন সম্পাদক উম্মে সালমা বেগম, লিগ্যাল এইড সম্পাদক সাহানা কবির, প্রশিক্ষণ-গবেষণা ও পাঠাগার সম্পাদক রীনা আহমেদ, প্রচার ও গণমাধ্যম সম্পাদক দিল মনোয়ারা মনু, প্রকাশনা সম্পাদক সারাবান তহুরা, রোকেয়া সদন সম্পাদক নাসরিন মনসুর, আন্তর্জাতিক সম্পাদক রেখা সাহা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক বুলা ওসমান প্রমুখ।