শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

আইনে নিষিদ্ধ থাকলেও রাজনীতিতে শিক্ষকরা

আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০১৯, ২২:০৯

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

আহসান জোবায়ের

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন-২০০৫ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরাসরি রাজনীতিতে জড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সক্রিয় রাজনীতিতে জড়িয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান স্বয়ং যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ১ নম্বর প্রেসিডিয়াম সদস্য। সম্প্রতি তিনি যুবলীগের সভাপতি হওয়ারও আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও মানবসম্পদ উপকমিটির সদস্যও। আওয়ামী লীগের গত কেন্দ্রীয় সম্মেলনে তিনি কুমিল্লা অঞ্চল থেকে কাউন্সিলর হিসেবে অংশ নেন। তিনি কুমিল্লা জেলা উত্তর আওয়ামী লীগের সদস্য।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ এর আট নম্বর ধারায় লেখা আছে, আচার্য, উপাচার্য, ডীন, বিভাগীয় প্রধান, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, বিভাগীয় পরিচালক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এ আইনের ৪৪ নং ধারার চার নং উপধারায় উল্লেখ আছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারী কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সদস্য হতে পারবেন না। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত্ জবির উপাচার্য মীজানুর রহমান যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর এক নম্বর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামসুল কবির রাহাত লক্ষ্মীপুর জেলার কমলনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি-কমলনগর) সংসদীয় আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরমও উত্তোলন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডীন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. প্রিয়ব্রত পাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির শিক্ষা ও মানবসম্পদ উপকমিটির সদস্য, ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ হালিমও আওয়ামী লীগের উপকমিটির সদস্য, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের পরিপন্থী।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আইনে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতিতে জড়ানোর বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আছে। তবে এটি কার্যকর নেই। আমাদের কাছে এ পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না তা জানতে চাইলে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে বলেন তিনি।

এ বিষয়ে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহিদুল্লাহ বলেন, শিক্ষক রাজনীতিতে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইনটি আমার জানা নেই। তবে এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে আইন দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আছি নিয়োগকর্তা হিসেবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে শিক্ষকদের রাজনীতি করা নিষেধ নেই। জগন্নাথের যে সব শিক্ষক রাজনীতিতে জড়িত তাদেরকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন।