গাজী জাহিদুর রহমান, তালা (সাতক্ষীরা) সংবাদদাতা
তালা উপজেলাসহ উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় দীর্ঘ সময় ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে গোটা জেলা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার পাশাপাশি সবজি, ধান ও আমসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে আমচাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝরে-পড়া আম ট্রাকপ্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকাতেও বিক্রি করতে পারছেন না কেউ কেউ। সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, আম সংগ্রহের আগে ঝড় হওয়ায় চাষিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ল্যাংড়া, হিমসাগর ও আম্রপালি আম কোথাও ৮০ ভাগ, কোথাও ৯০ ভাগ এবং কোথাও শতভাগ ঝরে পড়েছে। সবমোট ৮৩ ভাগ আমের ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্রটি আরো জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার সাতটি উপজেলায় ৪ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ২৯৯টি আমবাগানে আম চাষ হচ্ছে। ১৩ হাজার ৯৯ জন চাষি আম উত্পাদনের সঙ্গে জড়িত। এছাড়া ব্যক্তিপর্যায়ে আরো কয়েক হাজার আমচাষি রয়েছেন। চলতি মৌসুমে জেলায় আম উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪০ হাজার মেট্রিক টন। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আম পাড়া শুরু হওয়ার কথা ছিল।
তালা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে তালা উপজেলায় ৭১৫ হেক্টর জমির ১ হাজার ৪৭৫টি বাগানে ৭ হাজার ৭০ মেট্রিক টন উত্পাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। গত সপ্তাহে সাতক্ষীরায় কালবৈশাখী ঝড়ে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে পড়া সেই কাঁচা আম ৫ থেকে ১৫ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হয়েছে। করোনা প্রকোপ ও আম্ফান আমের চূড়ান্ত ক্ষতি করেছে বলে দাবি করছেন আমচাষিরা। তালা উপজেলার নাংলা গ্রামের আমচাষি মো. শাহীনুর রহমান ও সদরের আব্দুল গণি বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে সব শেষ হয়ে গেছে। পড়া আম কেউ নিতে চাচ্ছে না। যেখানে এক মণ আম ১ হাজার ৫০০ টাকা বিক্রি হওয়ার কথা সেখানে এক ট্রাক আম ১ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে একজন নিয়ে চলে গেছেন। এ সময় তারা সরকারি সহায়তা দাবি করেন।
তালা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান সাতক্ষীরার কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমচাষিরা। লাখ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তারা আম চাষে নেমেছিলেন। তাদের অধিকাংশ আম পড়ে গেছে। ৮৩ ভাগ আমের ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে।