শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

করোনার প্রভাবে কারিগরদের মধ্যে নেই ঈদ আনন্দ

আপডেট : ২২ মে ২০২০, ২১:১৩

বগুড়ার টুপি পল্লি

স্টাফ রিপোর্টার,বগুড়া

সারা বছরের চেয়ে রমজানে টুপির চাহিদা বেশি। প্রতি বছর এ সময়ের অপেক্ষায় থাকেন টুপি তৈরির কারিগররা। বগুড়ার ধুনট-শেরপুরের টুপি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হয়। এতে দামও মিলে আশানুরূপ। টুপি বেচে ঈদের নতুন পোশাক, প্রসাধনীসহ সৌখিন সামগ্রী কেনেন তারা। কিন্তু করোনার থাবায় এবারই তার ব্যতিক্রম। দরোজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে না টুপি। তাই ফিকে হয়ে যাচ্ছে কারিগরদের ঈদের আনন্দ। টুপির চাহিদা না থাকায় প্রায় ২ লাখ নারী ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। টুপি তৈরিতে নিয়োজিত নারীরা জনিয়েছেন, পাইকারি ব্যবসায়ীরা টুপি না কেনায় ঈদের আগে তারা অন্তত ১০-১৫ হাজার টাকা আয় থেকে বঞ্চিত। এতে শুধু ঈদের কেনাকাটা করা যেমন অসম্ভব হয়ে পড়েছে তেমনি আগামীতে স্কুলকলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের পড়ালেখার খরচ বহন করাও কষ্টসাধ্য হবে। তারা অবিলম্বে সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।

শেরপুর ও ধুনট উপজেলার সব গ্রামেই কম-বেশি বাণিজ্যিকভাবে টুপি তৈরি করা হয়। যাদের মধ্যে সিংহভাগই নারী। তবে প্রত্যেক বছর রমজানে এ সংখ্যা বেড়ে যায়। গ্রামগুলোতে সুতাসহ টুপি তৈরির সব ধরনের উপকরণ পৌঁছে দেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। টুপি তৈরি শেষ হলে তারা বাড়ি বাড়ি ঘুরে সুতার দাম বাদ দিয়ে পাইকারি বাজারদর অনুযায়ী সেই টুপিগুলো কিনে নেন। এ বছর করোনার কারণে বিদেশে টুপি রপ্তানি হচ্ছে না। ফলে টুপির চাহিদা কমে যাওয়ায় সংকটে পড়েছেন কারিগররা। টুপির পাইকারি ক্রেতারা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বড়ো বড়ো শহরের সিংহভাগ মার্কেটগুলোতে আগের মতো স্বাভাবিক কেনাকাটা হচ্ছে না। এর পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই তারা নারীদের উত্পাদিত টুপি কেনা বন্ধ রেখেছেন।

বগুড়ায় নারীদের উত্পাদিত টুপি পাইকারি বিক্রেতাদের সংগঠন বাংলাদেশ জালি টুপি অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বগুড়ার ধুনট ও শেরপুর উপজেলায় গৃহবধূ এবং তাদের স্কুলকলেজ পড়ুয়া মেয়েসহ প্রায় ২ লাখ নারী টুপি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সারা বছর উত্পাদিত টুপি রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বিক্রি হয়। বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে চাহিদা বেড়ে যায় বলেই রমজানে অন্তত ১ কোটি পিস টুপি উত্পাদন হয়। মানভেদে এসব টুপি ৩০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকায় বিক্রি হয়।