আহাদুল ইসলাম শিমুল, ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) সংবাদদাতা
উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন। প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেছে পিরোজপুরের গণপূর্ত অধিদপ্তর। যার প্রত্যাশী সংস্থা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষাসেবা বিভাগ। গত রবিবার ভবনটি হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান পিরোজপুর জেলার উপসহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক। শিগিগরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইন্দুরকানী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনটি উদ্বোধন করবেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
পিরোজপুর গণপূর্ত অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, ‘১৮ অক্টোবর টিপু সুলতান ও মাহফুজ ট্রেডার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমরা ফায়ার স্টেশনটি বুঝে পেয়েছি।’ জানা গেছে, ২০০২ সালের ২১ এপ্রিল উপজেলা গঠিত হওয়ার পর থেকে ইন্দুরকানীতে কোনো ফায়ার স্টেশন ছিল না। ফলে প্রায়ই অগ্নিদুর্ঘটনায় এ জনপদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে ২০০৬ সালে এক অগ্নিকাণ্ডে ইন্দুরকানী বাজারের অধিকাংশ দোকান পুড়ে যায়। এছাড়া ২০১৪ ও ২০১৬ সালেও একই বাজারে অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষতি হয়। যার ফলে ইন্দুরকানী উপজেলার যে কোনো অগ্নিদুর্ঘটনাসহ জানমাল রক্ষার উদ্দেশ্যে ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ইন্দুরকানী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তত্কালীন পরিবেশ ও বনমন্ত্রী এবং বর্তমান পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বরিশাল বিভাগের উপ-পরিচালক এ বি এম মমতাজ উদ্দিন আহমেদ জানান, ইন্দুরকানী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনটি সেবা প্রদানের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত করা হয়েছে। এ স্টেশনে ২৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকবেন। এরই মধ্যে এখানে ১৩ জন যোগদান করেছেন। এছাড়া উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ১ হাজার ৮০০ লিটারের ধারণক্ষমতার একটি পানিবাহী গাড়ি ও পাম্পটানা পিকআপ যুক্ত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এখানে আরো কিছু আধুনিক সরঞ্জাম যুক্ত করা হবে। সোমবার ইন্দুরকানী ফায়ার স্টেশন পরিদর্শন করেন ইন্দুরকানী উপজেলা চেয়ারম্যান এম মতিউর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার হোসাইন মুহাম্মদ আল মুজাহিদ, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাগা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দিলরুবা মিলন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বরিশাল বিভাগের উপ-পরিচালক এ বি এম মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, বরিশাল জেলার উপসহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন সিকদার, পিরোজপুর জেলার উপসহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক, ইন্দুরকানী ফায়ার স্টেশনের সাব-অফিসার আবুল হোসেন প্রমুখ। ইন্দুরকানী উপজেলা জাতীয় পার্টি-জেপির সদস্যসচিব শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘ইন্দুরকানীতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন নির্মিত হওয়ায় উপজেলাবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে। ইন্দুরকানীতে ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করায় উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক মন্ত্রী এবং পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তবে দুর্ঘটনাকবলিত মানুষদের দ্রুত উদ্ধার ও চিকিত্সাসেবা দেওয়ার জন্য এ ফায়ার স্টেশনে একটি অ্যাম্বুলেন্স খুব প্রয়োজন।’