শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

দুঃখের সীমা নেই ফুলবাড়ীর বেদে সম্প্রদায়ের

আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২০, ২১:৩৬

নানা বাধা-বিপত্তির মধ্যে জীবন ও জীবিকা চালিয়ে যাচ্ছে বেদে সম্প্রদায়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তেই লড়াই করে দিন কাটছে তাদের। এমনি নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার পাড়সিংড়া গ্রাম থেকে ১৪টি বেদে পরিবার কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর পশ্চিম পাড়ে এসে খোলা আকাশের নিচে তাঁবু টাঙিয়ে বসবাস করছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে বেদে সম্প্রদায়ের বসবাস স্থলে গিয়ে দেখা গেছে, ১৪টি বেদে পরিবারের শিশু-নারীসহ প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন মানুষ গত ৮-১০ দিন ধরে জীবন-জীবিকার জন্য লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে এদের মধ্যে সাপ না থাকলেও দুই বেলা খাবারের জন্য তাদের কেউ কেউ বাড়ি বাড়ি বানরের খেলাসহ বিভিন্ন রোগের তাবিজ-কবজ, সিঙা লাগানো, দাঁতের পোকা তোলা, কটক মাছের কাঁটা ও বাত-ব্যথার তেল বিক্রির জন্য বেড়িয়ে পড়েছেন। বেদে বৃদ্ধা খাতুন, আলামিন ও তার স্ত্রী মর্জিনা খাতুন জানান, সারা দিন ২০০ থেকে ২৫০ টাকা আয় করে তা দিয়ে কি হামার জীবন চলে বাহে! শিশু শারাফাত ও আখিরুল বলে, দেখেন না ময়লা জামা-কাপড় পরে আছি, নেই নতুন জামা-কাপড়, লেখাপড়ার জন্য মনটা চায় কিন্তু দুই বেলা খাবারের জন্য দেশ-বিদেশে বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতে হয় কি করে স্কুলে যাব। বেদে সম্প্রদায়ের সর্দার বরণ আলী (৫৫) জানান, এক দিকে বেঁচে থাকা অন্য দিকে বাপ-দাদার পেশা ধরে রাখার জন্য লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। স্ত্রী-সন্তান ও ছেলেমেয়েসহ নাতি-নাতনিদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে খোলা আকাশের নিচে তাঁবুতে বসবাস করে জীবন বাঁচার জন্য লড়াই করেই যাচ্ছি। আমাদের বেদে সম্প্রদায়ের যতই দিন যাচ্ছে ততই করুণ পরিণতি বাড়ছে। বিভিন্ন জেলায় খোলা আকাশের নিচে বাস করছি আমরা। শিমুলবাড়ী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান এজাহার আলী বলেন, এখানে বেদে সম্প্রদায় আসার বিষয়টি শুনেছি। তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হবে। তাদের যদি থাকার ব্যাপারে কোনো অসুবিধা হয়, তবে তা দেখভাল করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুর রহমান বলেন, এ মুহূর্তে বেদে সম্প্রদায়কে দেওয়ার মতো কোনো বরাদ্দ নেই। তবে তাদের যদি এ উপজেলায় বসবাস করতে কোনো সমস্যা হয়, তা গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে।