শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

চারা বিক্রিতে আটকে আছেন চাষিরা

আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২০, ২১:৪৬

কিশোরগঞ্জ উপজেলায় কফি চাষ

মো. শামীম হোসেন বাবু, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) সংবাদদাতা

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় কফি চাষ শুরু হলেও ফল বিক্রিসহ তা উত্পাদন বা প্রক্রিয়াজাতকরণের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় কফি চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন স্থানীয় চাষিরা। এ পরিস্থিতিতে বাগানের পরিধি না বাড়িয়ে কফির চারা বিক্রিতে বেশি আগ্রহী চাষিরা। যদিও উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, এ উপজেলার মাটি ও আবহাওয়া কফি চাষের উপযোগী হওয়ার কারণে সমতল জমিতে বাণিজ্যিকভাবে কফি চাষ করা সম্ভব। আগামীতে সম্ভাবনায় এই কফি চাষের পরিধি বাড়ানোর কথা ভাবছে কৃষি বিভাগ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার প্রথম কফিচাষি আব্দুল কুদ্দুস বাগান বাদ দিয়ে কফির চারা বিক্রিতে এখন মনোযোগী হয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে কথা হয় উপজেলার পুটিমারী ইউনিয়নের কাচারিপাড়া গ্রামের আরেক কফিচাষি সুলতান আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, একটি বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় এবং পরামর্শে ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ জমিতে ১০০টি কফি চারা রোপণ করেন। এক বছরের মাথায় তার বাগানে কফি ফল হতে শুরু করে। এ বছর তার কফিগাছে প্রচুর পরিমাণে কফি ধরেছে। কয়েক দিন আগে তার কফিগাছগুলো থেকে প্রায় ৫০ কেজি কফি উত্তোলন করেন। কিন্তু বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তির অভাবে কফি তৈরি করতে পারছেন না। কীভাবে কফি তৈরি করতে হয় তাও জানেন না। তাছাড়া এখন পর্যন্ত কেউ কফি কিনতেও আসেনি। তাই কফি চাষ করে অনেকটা হতাশার মধ্যে আছেন।

এদিকে, নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার প্রথম কফিচাষি আব্দুল কুদ্দুস জানান, তিনি দীর্ঘদিন থেকে নার্সারি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। কক্সবাজার জেলার এক নার্সারি মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে ২০০৯ সালে ১৫০টি কফির চারা সংগ্রহ করেন। তখন প্রতিটি চারার মূল্য ছিল ২০ টাকা। শেষে তিনি কফি উত্পাদনে সফল হন। কিন্তু উন্নত প্রযুক্তি না থাকার কারণে কফিবাগান বাদ দিয়ে বর্তমানে কফির চারা বিক্রিতে বেশি নজর দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি এক ফুট সমান কফির চারা ১০০ টাকা দামে বিক্রি করছেন। সে অনুযায়ী পাঁচ ফুট কফি চারার দাম ৫০০ এবং ১০ ফুট হলে ১ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন এবং বর্তমানে চারা বিক্রি করে তিনি বেশি লাভবান হচ্ছেন। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় বলেন, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা কফি চাষের উপযোগী। এ লক্ষ্যে কিশোরগঞ্জ উপজেলায় কফির বাগান বৃদ্ধিতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান মণ্ডল বলেন, নীলফামারীর জমি কফি চাষের উপযোগী। সে জন্য এ জেলায় কফি চাষে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা জেলার ১৫০ জন কফিচাষিকে কফি তৈরিসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কৃষি অধিদপ্তরে লিখিতভাবে জানিয়েছি। প্রশিক্ষণ পেলে কফিচাষিরা নিজেই কফি তৈরি করতে পারবেন।