শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

খাগড়াছড়িতে জৈব বালাইনাশক পদ্ধতিতে বিষমুক্ত আম উত্পাদন

আপডেট : ২১ জুন ২০২১, ২০:৪৯

তমাল তরুণ দাশ, দীঘিনালা (খাগড়াছড়ি) সংবাদদাতা

খাগড়াছড়ির পাহাড়ে জৈব বালাইনাশক পদ্ধতিতে বিষমুক্ত ও নিরাপদ আম উত্পাদন হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সদরের ভুয়াছড়ি এলাকায় পাঁচ একর ঢালু পাহাড়ে আম চাষ করা হচ্ছে। বাগানের পরিচালক কৃষক আবদুল কুদ্দুস জানান, সম্পূর্ণ জৈব বালাইনাশক পদ্ধতিতে বাগানের পরিচর্যা করা হয়েছে। বিশেষ করে বাগানে আম পরিপক্ব হওয়া পর্যন্ত (কর্পূর, নিমপাতার রস, হলুদ, দেশি গাভির মূত্র) প্রক্রিয়াজাত করে চার বার স্প্রে করেছি। এতে পোকামাকড়ের উপদ্রব অনেকটা কম দেখা গেছে।

ভুয়াছড়ি নিরাপদ কৃষি খামারের আমবাগানে কথা হয় আমচাষি আমিনুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রথম বছর জৈব বালাইনাশক পদ্ধতি ব্যবহার করার ফলে ফলন অনেকটা কম হয়। কিন্তু আমের আকার বড় হয়। আমের স্বাদ অন্য বাগানের আমের তুলনায় অনেক বেশি। তিনি বলেন, ‘পাহাড়ে আমবাগানের পাশাপাশি ফুল গাছ লাগালে যেসব ক্ষতিকর পোকা থাকে, সেগুলো ঐ ফুল গাছের ওপর আশ্রয় নিবে। তখন ক্ষতিকর পোকা ফলের তেমন ক্ষতি করতে পারে না।’ তিনি আরো বলেন, ‘বাগানে বিভিন্ন কৃত্রিম স্প্রে করলে খারাপ পোকার সঙ্গে ভালো পোকাও মারা যায়। এতে পরিবেশের যেমন ক্ষতি হয়, তেমনি জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয়। ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে।’

স্থানীয় বাসিন্দা মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘বিষমুক্ত আম চাষে সব বাগান মালিকদের উদ্বুদ্ধ করা যায় তাহলে পাহাড় জুড়ে নিরাপদ আম উত্পাদন সম্ভব হবে। পাহাড়ের বাইরের জেলাতেও বিষমুক্ত আম বাজারজাত করা সহজ হবে।’ স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘নিরাপদ কৃষিখামার দেখে বুঝলাম এ বাগানে কোনো ওষুধ ব্যবহার করেনি। কীটনাশকের বিকল্প হিসেবে প্রাকৃতিক উপায়ে বাগানে আম উত্পাদন করছে।’ খাগড়াছড়ি কৃষি বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুন্সী রাশীদ আহমেদ জানান, জৈব বালাইনাশক পদ্ধতি নেপালেও পরিচিত। ভারতের কৃষিবিজ্ঞানী ড. সঞ্জীব ভুচার জৈব বালাইনাশক বিষয়ে নেপালে কাজ করেন। খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ এ বিষয়ে কয়েক দিনের প্রশিক্ষণে (জৈব বালাই পদ্ধতি) স্থানীয় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় খাগড়াছড়ি সদরে আমবাগান মালিক আমিনুল ইসলাম (বাবু) প্রাকৃতিকভাবে চাষের প্রচলন শুরু করছে। তবে জৈব বালাইনাশক পদ্ধতিতে আম চাষে ফলন কম হবে এবং খরচও বেশি হবে। অন্য আমের চেয়ে দামে অনেক বেশি হবে।