নেত্রকোনা প্রতিনিধি
নেত্রকোনা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ভোটারসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ওয়ার্ড সীমানায় অসংগতি দেখা দিয়েছে। এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডের ভোটার সংখ্যা বেশি হলেও উন্নয়ন বরাদ্দ একই রকম রয়েছে। এতে বিভিন্ন সেবা প্রদানে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। নাগরিকরা সমহারে সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নাগরিকদের সার্বিক উন্নয়ন সমহারে করার লক্ষ্যে ওয়ার্ডগুলো ভোটার অনুপাতে বিভক্তের দাবি জানিয়েছে সচেতন নাগরিকরা।
স্থানীয় সরকার সূত্র মতে, সীমানা বা ওয়ার্ড নির্ধারণকালে এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডের ভোটার সংখ্যা কোনোভাবেই ১০ শতাংশের চেয়ে কম-বেশি হবে না। পৌর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২১ দশমিক ০২ বর্গকিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট নেত্রকোনা পৌর এলাকা ৯টি ওয়ার্ডে বিভক্ত। ২০১৫ সালের পৌর নির্বাচনের সময় এখানে ভোটার সংখ্যা ছিল ৫৮ হাজার ৮১৪ জন। ২০২১ সালে নির্বাচনে ভোটার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭ হাজার ৫৫৪ জন। এ হিসেবে গড়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে ভোটার থাকার কথা ৭ হাজার ৫০৬ জন। কিন্তু বাস্তবে একেকটা ওয়ার্ডের ভোটার সংখ্যা একেক রকম। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার আছেন ৪ হাজার ১৫৩ জন। অন্যদিকে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার রয়েছে ১১ হাজার ৩০৭ জন। একইভাবে অন্য ওয়ার্ডগুলোর ভোটার সংখ্যায় পার্থক্য রয়েছে প্রায় দেড় থেকে ২ হাজার। এ ক্ষেত্রে সরকারের ওয়ার্ড ভাগের নীতিমালাও মানা হচ্ছে না। নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লেখক হায়দার জাহান চৌধুরী বলেন, এক ওয়ার্ডে একেক রকম ভোটার। তাই উন্নয়নে সমস্যা হচ্ছে। জেলা চেম্বারের সহসভাপতি হাজি এইচ আর খান পাঠান সাকি বলেন, ভোটারের আধিক্যের কারণে এবং ভোটার সংখ্যার অনুপাতে ৯টি ওয়ার্ডকে ১২টি ওয়ার্ডে রূপান্তরিত করলে সুষম উন্নয়ন সম্ভব। সরকারের উচিত বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা।
প্যানেল মেয়র ও সিনিয়র কাউন্সিলর এস এম মহসিনুল আলম বলেন, পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে নতুন নতুন বসতি গড়ে উঠেছে। ব্যবসাবাণিজ্য বেড়েছে। ভোটার বেড়েছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে ওয়ার্ড সংখ্যা বাড়ানো এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। নেত্রকোনা পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ নজরুল ইসলাম খান বলেন, বর্তমান ৯টি ওয়ার্ডে ভোটার বেড়ে যাওয়ায় ওয়ার্ড সীমানায় অসংগতি দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন সেবা দিতে গিয়ে আমরা সমস্যায় পড়ছি। তাই নাগরিকদের দাবি ৯টি ওয়ার্ডকে ভেঙে ১২টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশনকে লিখিতভাবে জানানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন, নেত্রকোনা পৌরসভা প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হওয়ায় এর গুরুত্ব অনেক। ভোটার সংখ্যা বাড়ার কারণে নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। তাই ওয়ার্ড সংখ্যা বাড়ানো উচিত। এতে করে নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। যদি পৌরসভা ওয়ার্ড সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় তাহলে প্রশাসন সেই কাজে সহযোগিতা করবে।