শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সৈয়দপুর-ঢাকা আকাশপথে বাড়েনি যাত্রীসেবার মান

আপডেট : ২৬ জুন ২০১৯, ২২:০৭

প্রতিদিন ১৪ ফ্লাইট

সৈয়দপুর (নীলফামারী) সংবাদদাতা

সৈয়দপুর-ঢাকা আকাশপথে প্রতিদিন ১৪টি ফ্লাইট চালু রয়েছে। তবে যাত্রীসেবার মান বাড়েনি বলে মত এ রুটে চলাচলকারীদের।

উত্তরের রংপুর-দিনাজপুর জেলার মধ্যবর্তী স্থান সৈয়দপুরে ১৯৭১ সালে বিমানবন্দরের গোড়াপত্তন হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় শহরের পুরো নেতৃত্ব চলে যায় পাকসেনা আর বিহারিদের হাতে। পাকবাহিনী নিজেদের গোলাবারুদ ও রসদ সরবরাহের জন্য বিমান ঘাঁটি তৈরির পরিকল্পনা নেয়। শক্ত সামর্থ্য বাঙালিদের ধরে এনে নির্যাতন চালিয়ে বিমানবন্দর তৈরির মাটির কাজ করিয়ে নেয়। স্বাধীনতার পর  প্রায় ১৩৬ একর জমিতে গড়ে ওঠা বিমানবন্দরে প্রথম বিমান চলাচল শুরু হয় ১৯৭৯ সালে। ১৯৮৮ সালের ভয়াবহ বন্যার সময় সড়ক ও রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে এই বিমানবন্দরের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের সর্বত্র ত্রাণসামগ্রী পাঠানো হয়।

বর্তমানে সৈয়দপুর-ঢাকা রুটে প্রতিদিন ১৪টি ফ্লাইট চলাচল করছে। এর মধ্যে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ছয়টি, নভো এয়ারলাইন্সের ছয়টি ও বাংলাদেশ বিমানের দুটি ফ্লাইট নিয়মিত চলাচল করছে। এসব চলাচলকারী বিমানের নিয়মিত যাত্রী ব্যারিস্টার মোকছেদ আলী, ইঞ্জিনিয়ার সেকেন্দার আলী, লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি লায়ন নজরুল ইসলাম ও  বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ঝর্ণা ঘর ফাউন্ডেশনের সভাপতি সৈয়দা রুখসানা জামান শানু জানান, বিমানগুলোর সার্ভিস মোটামুটি ভালো। তবে মাঝে মধ্যে সিডিউল বিপর্যয় ও টিকিট কাটার পর হঠাত্ যান্ত্রিক ক্রটির কারণে বিমান না আসায় তাদের বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। এছাড়া দূর-দূরান্তের বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট ও রংপুরের যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।

সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ মো. আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, এক বিমানের ভাড়ার সঙ্গে অন্য বিমানের ভাড়ার মিল নেই। বিমানবন্দর টার্মিনালে কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় যাত্রীরা গরমে কষ্ট পাচ্ছেন।

সৈয়দপুরের মাওয়া ট্রাভেলস্ ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমিনুল ইসলাম মিঠু জানান, এজেন্সিগুলো যাত্রীদের টিকিটপ্রাপ্যতা ও বিমানে ওঠা পর্যন্ত নিশ্চিত করে। তবে মাঝে মধ্যে যান্ত্রিক ক্রটির কারণে বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটলে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়।

সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক শাহীন আহমদ জানান, উত্তরাঞ্চলের একমাত্র চালু এ বিমানবন্দরে দীর্ঘদিন ধরে কর্মকর্তা-কর্মচারীর ৩৬টি পদ শূন্য থাকায় যাত্রীরা কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া প্রায়ই উত্সুক দর্শনার্থীরা নিরাপত্তা বলয় ভেঙে বিমান দেখছেন। ফলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বিমানবন্দর আধুনিকায়নের কাজ চলছে। যাতে সার্কভুক্ত দেশগুলো বিমানবন্দরটি ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। ইতিমধ্যে বিমানবন্দরের রানওয়ে বাড়ানোর জন্য এলাকা বাছাই কাজ শেষ করেছে। এছাড়া পাঁচশ ভোল্টের জেনারেটর স্থাপন করা হয়েছে। রাতে বিমান ওঠানামার জন্য রানওয়েতে লাইট স্থাপন করা হয়েছে। পুরো বিমানবন্দর এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে, গঠন করা হয়েছে নিরাপত্তা বলয়। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার জন্য বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ এবং ফায়ার ব্রিগেড যাতায়াতের জন্য অ্যাপ্রোন বড় করা হয়েছে। পুলিশের অস্থায়ী চেকপোস্ট বসানো হয়েছে বিমানবন্দরের প্রবেশপথে। উন্নতমানের স্কানিং মেশিনও বসানো হয়েছে, সেই সঙ্গে স্থাপন করা হয়েছে সিকিউরিটি লাইটও।