শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কেশবপুরে অনাবৃষ্টিতে ঘেরে মাছ উত্পাদন ব্যাহত

আপডেট : ১৯ জুলাই ২০১৯, ২০:৫৭

কেশবপুর (যশোর) সংবাদদাতা

অনাবৃষ্টির কারণে কেশবপুরের সাড়ে চার হাজার মত্স্য ঘেরে পানি না থাকায় ব্যবসায়ীরা মাছ উত্পাদন করতে পারছেন না। স্থানীয় প্রশাসন বন্যা ও জলাবদ্ধতার আশঙ্কায় এসব ঘেরে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এদিকে পানির অভাবে ঘেরের তাপমাত্রা বেড়ে অক্সিজেন ফেল করে মাছ মরার কারণে হুমকিতে পড়েছে মাছ চাষ।

ঘের ব্যবসায়ী চাঁদ আলি বলেন, যারা পোনা উত্পাদন করে তারা পানির অভাবে পোনা উত্পাদন করতে পারছে না। উপজেলায় সাদা মাছ উত্পাদনকারী চাষি সংখ্যায় বেশি। গত বছরের মতো এ বছরও বৃষ্টির পরিমাণ খুবই কম। এরপরও উপজেলা প্রশাসন ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন করতে দিচ্ছে না। আবার বিদ্যুত্ চালিত সেচ পাম্প দিয়ে পানি তুললে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। যা মাছ চাষির জন্য বড়ো ধরনের হুমকি স্বরূপ।

অপর ঘের ব্যবসায়ী রাজিবুল হাসান বলেন, তিন বছর আগে উপজেলা মত্স্য অফিস পরিপত্র জারি করে যে, ঘের ব্যবসায়ীরা পাঁচ ফুট পর্যন্ত ঘেরে পানি উত্তোলন করতে পারবে। তবে সরকারি রাস্তা ঘেরের বেড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে না। এসব শর্ত মেনে যখন ঘেরে পানি উত্তোলন করতে যাই তখন তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে  একাধিক বৈঠক করেও কোনো সুরাহা হয়নি।

উপজেলা সিনিয়র মত্স্য কর্মকর্তা আব্দুল বারী বলেন, মাছ চাষ করতে হলে পানির বিকল্প নেই। এখন মাছ উত্পাদনের উপযুক্ত সময়। এ সময় ঘেরে পানি না থাকায় ক্যানেলে পোনা মজুদের ঘনত্ব বেশি থাকে। তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে গেলে মাছ মারা যাবে। মাছ বাঁচিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই ঘেরে পাঁচ ফুট পানি থাকতে হবে। পানির গভীরতা বেশি না হলে অক্সিজেন ফেল করে মাছ মরে যেতে পারে।

যশোর পল্লী বিদ্যুত্ সমিতি-২ এর কেশবপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম আবু আনাস মো. নাসের বলেন, উপজেলায় ১৭০০ সেচ গ্রাহক রয়েছে। নিয়মমাফিক সংযোগ নিলে বিচ্ছিন্ন করার কোনো সুযোগ নেই। সেচ সংযোগ থেকে ঘেরে পানি দেওয়ার কারণে ৫৬টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তারা ঘেরে পানি তুলতে চাইলে হ্যাচারি কিংবা শিল্প সংযোগ নিতে পারবে।

উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান বলেন, উপজেলার ৩ লাখ মানুষ ২০ হাজার মানুষের কাছে জিম্মি। তারা ঘেরে পানি তোলার কারণে বন্যা ও জলাবদ্ধতা হতো। তাছাড়া ভূ-গর্ভস্থ পানি সংরক্ষণে তাদের ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।