বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দাবাড়ি সড়ক

অসংখ্য খানাখন্দে ভরা দুর্ভোগে চলাচলকারীরা

আপডেট : ২০ আগস্ট ২০১৯, ২১:২১

চলতি বছর বন্যার কারণে এলজিইডির জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দাবাড়ি সড়কের প্রায় ৩৬ কিলোমিটার পাকা সড়কে অসংখ্য খানাখন্দে ভরে গেছে। বর্তমানে বন্যার পানি নেমে গেলেও দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দাবাড়ি সড়কের অনেকাংশে খাদ ও ডোবার সৃষ্টি হওয়ায় এমনকি বিকল্প কোনো সড়ক না থাকায় যান চলাচল ও যাতায়াত প্রায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দাবাড়ি সড়কের বাহাদুরাবাদ থেকে কাঠারবিল ও তারাটিয়া হয়ে সানন্দাবাড়ি পর্যন্ত পাকা সড়কের খানাখন্দের ওপর এলাকাবাসী দীর্ঘ ৩৬ কিলোমিটারে অন্তত ১০টি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছেন। এসব সাঁকোর ওপর দিয়ে পথচারীরা কোনোমতে পায়ে হেঁটে উপজেলা সদরে এমনকি রাজধানী ঢাকায় অতিকষ্টে যাতায়াত করে আসছেন। এছাড়া দেওয়ানগঞ্জের-সানন্দাবাড়ি থেকে মৌলভীরচর পর্যন্ত সাত কিলোমিটার দীর্ঘ পাকা সড়ক এবং ঝালোরচর থেকে কাদেরের মোড় হয়ে গোপালপুর পর্যন্ত অন্তত ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কে এখনো প্রায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দাবাড়ি সড়কে চলাচলকারী অটোরিকশা চালক আলামিন, আবুল হোসেন, শাহীন ও সোহেল রানা জানান, উপজেলার কান্দির গ্রাম ও কাঠারবিল এলাকায় তাদের বাড়ি। তারা দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দাবাড়ি সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে প্রতিনিয়ত প্রায় হাজার টাকার উপরে দৈনিক আয় করতেন। এখন পুুরো রাস্তাই ভাঙা। তাই তারা যাতায়াত করতে পারছেন না। ঈদ উপলক্ষ্যে যতটুকু গাড়ি চালানো যায়, ততটুকু চালাচ্ছেন। এতে দৈনিক ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় করে পরিবার-পরিজন নিয়ে অতিকষ্টে জীবনযাপন করছেন।

তারাটিয়া বাজার এলাকার অটোরিকশা চালক দুলাল মিয়া জানান, দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দাবাড়ি সড়কের কাঠারবিল, ঝালোরচর, সবুজপুর, মিতালি বাজার, তারাটিয়া বাজারসহ জলব্রিজ পর্যন্ত রয়েছে চারটি বাঁশের সাঁকো এবং অসংখ্য ভাঙা আর খানাখন্দে ভরা পাকা সড়ক। এই সড়ক দিয়ে কোনো যানবাহন চলে না।

পথচারী সুমন মিয়া, আব্দুর রহিম, গোবিন্দ লাল ও আয়মনা খাতুন বলেন, সানন্দবাড়ি থেকে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা সদরে আসার একমাত্র উপায় পায়ে হেঁটে যাতায়াত। তারা কাঠারবিল এবং তারাটিয়া বাজার এলাকা থেকে দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে আবার কোথাও কোথাও অটোরিকশায় এসেছেন। এ পথে পরিবহনের ব্যবস্থা না থাকায় ব্যবসায়ী কিংবা দোকানিরা ভাড়া করা লোকজন নিয়ে মাথায় কিংবা কাঁধে মালামাল পরিবহন করে নিয়ে যাচ্ছেন।

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হাসান জানান, এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক জরিপে এ উপজেলায় প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পাকা সড়ক এবং ৫০টি ব্রিজ-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন জানান, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় চলতি বছর বন্যায় ১৩৩ কিলোমিটার পাকা সড়ক এবং ১৫০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ৬৫টি ব্রিজ-কালভার্ট, বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত সড়কসহ ব্রিজ-কালভার্ট সংস্কারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।