স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার মুঠোফোনে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালু করে ২০০৯ সালের মে মাসে। এই ছয় বছরে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মুঠোফোনে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা শূন্য। অর্থাত্ কেউ এ সেবা নেয়নি।
মুঠোফোনে স্বাস্থ্যসেবা চালুর পর থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত মুঠোফোনে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করেছে এমন কোনো তথ্য হাসপাতালে লিপিবদ্ধ নেই। প্রচার-প্রচারণার অভাব ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে এখনও এ সম্পর্কে এলাকার মানুষ কিছুই জানে না।
সরকারি নিয়ম অনুসারে হাসপাতালে উপস্থিত না হয়েও সাধারণ মানুষ বা রোগীরা সরকারি নির্দিষ্ট মুঠোফোন নম্বরে কল করে চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে পারবে। এ জন্য মুঠোফোনের নম্বর জনস্বার্থে হাসপাতাল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রদর্শন এবং প্রচারণার জন্য সরকারিভাবে নির্দেশনা রয়েছে। এ ছাড়া নিয়ম অনুযায়ী কর্মরত চিকিত্সক ২৪ ঘণ্টা মুঠোফোনে রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত পরামর্শ দেবেন। প্রতিদিন কতজন রোগীকে পরামর্শ দেওয়া হলো রোগীরা কী ধরনের পরামর্শ চেয়েছে, সেসব তথ্য হাসপাতালের একটি রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে রাখার নিয়ম রয়েছে।
অথচ নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত নয় বছরে কতজন রোগী মুঠোফোনে পরামর্শ নিয়েছে এমন কোনো তথ্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিকট নেই। অভিযোগ রয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মুঠোফোনের নম্বরে ঐ জরুরি স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত কোনো প্রচার-প্রচারণা চালায়নি।
গত বুধবার সরজমিনে এলাকার বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারের ঐ জরুরি সেবার বিষয়টি সম্পর্কে কেউ অবহিত নয়।
নিকলী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বানিয়াহাটি গ্রামের শুক্কুর মাহমুদ বলেন, আপনার কাছেই আজ শুনলাম মোবাইল ফোনে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায়। এর আগে কারো কাছে আমি শুনিনি। আমার মনেহয় বিষয়টি এখনও কেউ জানে না।
সিংপুর গ্রামের বিল্লাল মিয়া বলেন, আমরা হাওরে থাকি আমরা কী করে জানব মোবাইলে স্বাস্থ্যসেবা নেওয়া যায়।
দামপাড়া কারার মাহতাব উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি নিজেই জানি না। ছাত্ররা কী করে জানবে মুঠোফোনে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায়।
নিকলী সদর ইউপি চেয়ারম্যান কারার শাহরিয়া আহমেদ তুলিপ বলেন, আমি একদিন একাধিকবার হাসপাতালের ঐ নম্বরে কল দিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ রিসিভ করেনি। এরপর থেকে আর কোনোদিন কল দেইনি।
জারুইতলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মানিক মিয়া বলেন, হাসপাতালের ঐ নম্বর প্রায় সময় বন্ধ পাওয়া যায়। তাদের কাজ ছাড়া মনেহয় এটি ব্যবহার করে না।
নিকলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চিকিত্সক আস আদ দ্বীন মাহমুদের ব্যক্তিগত মুঠোফোনে গতকাল কল করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকারি ঐ মুঠোফোনটি পুরান হয়ে গেছে সে কারণে মনেহয় এ রকম হয়ে থাকতে পারে। তাছাড়া মানুষ সেবা নেওয়ার জন্য ফোনও করে না।