শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিটিআরসির কলসেন্টারের সেবা

আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ২১:৩২

এখন সাইবার অপরাধ ও টেলিকম সেবা নিয়া যে কোনো অভিযোগ জানানো যাইতেছে বিটিআরসির কলসেন্টারে ১০০ নম্বরে ফোন করিয়া। শুরুতে সপ্তাহে পাঁচ দিন ১২ ঘণ্টা করিয়া অভিযোগ গ্রহণ করা হইলেও বর্তমানে কলসেন্টারটি ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকিতেছে। ইহা ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ জানানো যাইতেছে দিনের বেলায়। সেবাটি চালু করিবার পর জনগণের দিক হইতে সাড়া মিলিতেছে। ইহা খুবই ভালো লক্ষণ। মানুষ নানাবিধ সমস্যা নিয়া ২৪ ঘণ্টা অভিযোগ জানাইতেছে। যদিও তাত্ক্ষণিকভাবে সব অভিযোগের প্রতিকার করিতে হিমশিম খাইতেছে বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ। ২০১৮ সালের মে থেকে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে জমা পড়িয়াছে প্রায় ৮ হাজার অভিযোগ। বিটিআরসির লোকবল তথা অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে যে এই অভিযোগের পাহাড় জমিয়াছে তাহা বলাই বাহুল্য। জনসাধারণের মধ্যে সাইবার ও তথ্যপ্রযুক্তিগত সচেতনতা ক্রমশ বৃদ্ধি পাইলে অভিযোগ জানানোর প্রবণতা যে আরো বাড়িবে তাহাতে কোনো সন্দেহ নাই। তাই এই ক্ষেত্রে বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটাইতে হইবে। গ্রাহকদের অভিযোগের ক্ষেত্রগুলি বিশ্লেষণ করিলে দেখা যায়, তাহারা মূলত অভিযোগ করেন সিমবার, নেটওয়ার্ক ইস্যু, কোয়ালিটি অব সার্ভিস, ট্যারিফ রেট, রিচার্জ বা বিলিং, ডেটা ভলিউম ব্যবহার, ডেটার গতি, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস, প্রতারণামূলক কার্যক্রম, প্যাকেজ মাইগ্রেশন, কলড্রপ, কুইজ বা প্রাইজ অ্যাওয়ার্ড, সোশ্যাল মিডিয়া ও সাইবার-সম্পর্কিত বিষয়ে। ইহার মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ হইতেছে সাইবার অপরাধসংক্রান্ত। তাহার পরেই রহিয়াছে প্রতারণামূলক কার্যক্রম, প্যাকেজ মাইগ্রেশন ও কলড্রপ। সাইবার অপরাধ লইয়া বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাত্ক্ষণিক সমাধান দিতে পারিতেছে না, কারণ এই ধরনের সমস্যার সমাধান একটু সময়সাপেক্ষ। অন্য অভিযোগগুলির বেশির ভাগ টেলিকম সেবা প্রদানকারী অপারেটরগুলির বিরুদ্ধে। যেমন কলড্রপ নিয়া যেই সকল অভিযোগ আসিতেছে তাহা সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে জানাইয়া সমাধানের চেষ্টা চলিতেছে। কলড্রপের টাকা গ্রাহককে ফিরাইয়া দেওয়া হইতেছে। ইহা নিঃসন্দেহে প্রশংসাযোগ্য উদ্যোগ।

পূর্বে কোনো অভিযোগ জানাইতে হইলে সশরীরে বিটিআরসিতে আসিতে হইত, রীতিমতো লিখিতভাবে অভিযোগ জানাইতে হইত। এখন বাড়িতে বসিয়াই অভিযোগ জানানো যাইতেছে এবং তাহার প্রতিকার মিলিতেছে। তবে লোকবলের ও অবকাঠামোগত যে সীমাবদ্ধতা রহিয়াছে তাহা কাটাইয়া উঠিতে সরকারকে উদ্যোগী হইতে হইবে। পাশাপাশি সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কেবল সরকারের উপর নির্ভর করিয়া বসিয়া থাকিলে চলিবে না, জনগণকেও নিজ নিজ সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করিতে আগাইয়া আসিতে হইবে। সচেতন হইতে হইবে ব্যক্তিগত তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে, অন্তর্জাল ব্যবহারের সময় যতদূর পারা যায় নিজের সুরক্ষা নিজেকে নিশ্চিত করিতে হইবে। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট বিটিআরসির কর্তৃপক্ষকেও তত্পর থাকিতে হইবে, যাহাতে অভিযোগকারীরা সঠিক সেবা পান এবং প্রতিষ্ঠানের উপর আস্থা বাড়ে।