শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

গুজব প্রতিরোধে হোয়াটসঅ্যাপ

আপডেট : ১৭ জুন ২০১৯, ২১:৪৬

ইন্টারনেট ও সামাজিক মাধ্যমগুলি মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব বেগ এবং আবেগের সঞ্চার করিয়াছে। কিন্তু একইসঙ্গে বাড়াইয়াছে অস্থিরতা, উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা। আর এই সমস্যাগুলি প্রকট করিয়া তুলিতেছে নানা রকমের ভুয়া খবর। সামাজিক মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজিং সার্ভিস ব্যবহার করিয়া ভুয়া খবরের বিস্তার কিছু দেশের জন্য একটা বড় সমস্যা হইয়া দাঁড়াইয়াছে। ভুয়া খবরের বিস্তার প্রতিরোধে ব্যবহারকারীকে সচেতন করিবার পাশাপাশি নূতন পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়াছে ফেসবুকের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়া খবর, প্ররোচনামূলক মেসেজ এবং স্প্যাম আটকাইতেই এই পদক্ষেপ। নূতন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেসেজ ফরওয়ার্ডিংয়ে রাশ টানিবে হোয়াটসঅ্যাপ। নূতন নিয়মে একসঙ্গে পাঁচজনের বেশি ব্যবহারকারীর কাছে কোনো মেসেজ ফরোয়ার্ড করা যাইবে না। বিশ্বব্যাপী সকল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রাহকের জন্যই নূতন নিয়ম প্রযোজ্য হইবে। শত কোটির বেশি মানুষের দেশ ভারতে হোয়াটসঅ্যাপে ছড়ানো গুজবকে কেন্দ্র করিয়া মানুষ পিটাইয়া হত্যার ঘটনা সেখানে ভয়াবহ আকার ধারণ করিয়াছে। তাহারই পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ছয় মাস আগে এই নিয়ম করা হয়। এখন সেই নিয়ম বিশ্বব্যাপী সকল হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে। ইতিপূর্বে ২০ বার একটি মেসেজ ‘ফরওয়ার্ড’ করা যাইত।

বিভিন্ন দেশে সামাজিক অস্থিরতা ও অঘটন বাড়াইতেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলিতে ছড়াইয়া পড়া ভুয়া খবরগুলি। অনেক সময় সেগুলি ‘ভাইরাল’ হইয়া ধর্মীয় কিংবা জাতি ও বর্ণগত সংঘাতেরও জন্ম দিতেছে। ফলে কাছাকাছি সময়ে নানা ধরনের নেতিবাচক প্রচারণা ঠেকাইতে ব্যর্থ হওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়িয়াছে হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেইসবুক। তাহারা আরও কঠোর হইতেছে। যেই সকল পেজ ও গ্রুপ হইতে ভুয়া খবর ছড়ানো হইবে তাহা বন্ধ করিয়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়াছে প্রতিষ্ঠানটি। এখন হইতে হোয়াটসঅ্যাপে কোনো গ্রুপ খুলিতে চাহিলে তাহাতে ২৫৬ জনের বেশি সদস্য থাকা চলিবে না। হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ জানায়, অ্যাপটি একসঙ্গে অনেকজনকে মেসেজ পাঠানোর উদ্দেশ্যে বানানো হয় নাই। উপরন্তু ব্যবসায়িক স্বার্থে অটোমেটেড মেসেজ পাঠানো নিষিদ্ধ। ব্যক্তিগত ব্যবহারের মধ্যেই হোয়াসটঅ্যাপকে সীমাবদ্ধ রাখিতে আগ্রহী সংস্থাটি। তবে ঠিক কী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হইবে তাহা এখনো কিছু খোলাসা করে নাই সংস্থা। এই পদক্ষেপ কতটুকু কার্যকর ভূমিকা রাখিতে পারিবে তাহা দেখিবার বিষয়। কারণ ভুয়া খবর ও গুজব প্রতিরোধে অনেক নিয়ম চালু করিয়াও প্রবণতাটি থামানো যাইতেছে না। বিভিন্ন দেশের সরকারও নানা আইনও প্রণয়ন করিয়াছে ভুয়া খবর প্রতিরোধে।

বাংলাদেশেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া খবরের বিষয়টি বেশ আলোচিত। কিছু ঘটনায় ভুয়া খবরের তীব্র নেতিবাচক প্রভাব আমরা দেখিয়াছি। তাই বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সাইটের দায়িত্বশীলতা দিন দিন বাড়িয়াছে। এই ব্যাপারে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের মাধ্যমে ভুয়া খবর রটনাকারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত, যাহাতে রটনাকারীরা শাস্তিস্বরূপ নিজেদের ক্ষতি এড়াইয়াতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করিতে বাধ্য হন।