শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

বিনোদনকেন্দ্রগুলিতে মানুষের ঢল

আপডেট : ১৬ আগস্ট ২০১৯, ২১:৪১

ঈদের আনন্দকে আরো বাড়াইয়া তুলিতে বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে ভিড় করিয়াছে মানুষ। রাজধানীসহ সারা দেশেই বিনোদনকেন্দ্রগুলিতে মানুষের উপচাইয়া পড়া ভিড়। রাজধানী ঢাকায় হাতিরঝিল, শিশুপার্ক, চিড়িয়াখানাসহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে উপচাইয়া পড়িয়াছিল তাহারা। পাশাপাশি অসংখ্য মানুষ ছুটিয়া গিয়াছিলেন রাজধানীর নিকটবর্তী গাজীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে, আশুলিয়া এলাকার ফ্যান্টাসি কিংডমে, নন্দন পার্কে এবং নরসিংদী এলাকায় স্থাপিত ড্রিম হলিডে পার্কসহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে। গত সোমবার ঈদের দিন হইতেই বিনোদনপ্রেমী মানুষের ব্যাপক সমাগম ছিল বিনোদনকেন্দ্রেগুলিতে। যাহারা ছুটিতে গ্রামে যাননি, শহরেই থাকিয়া গিয়াছেন মূলত তাহারাই বের হইয়াছেন বিনোদনের প্রত্যাশায়। আমরা জানি, রাজধানী ঢাকায় বিনোদনকেন্দ্রের অপ্রতুলতা রহিয়াছে, রহিয়াছে নানা অব্যবস্থাপনা। তাই হাতেগোনা বিনোদনকেন্দ্রে দলে দলে ভিড় জমায় মানুষ। আর এই ভিড়ের ফলে জনারণ্যে পরিণত হয় স্থানগুলো।

ঢাকার পাশাপাশি চট্টগ্রামেও বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে ভিড় করিয়াছে মানুষ। নগরের কাজীর দেউড়ি শিশু পার্ক, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, ফয়’স লেক ও সি-ওয়ার্ল্ড, বহদ্দারহাটের স্বাধীনতা পার্ক, পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত, আগ্রাবাদের কর্ণফুলী শিশু পার্ক, বিমানবন্দর রোডের বাটারফ্লাই পার্ক, পারকি সমুদ্রসৈকত, গুলিয়াখালী সমুদ্রসৈকতে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। উপচাইয়া পড়া ভিড় ছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত চিড়িয়াখানা এবং কাজীর দেউড়ি শিশু পার্কে। ইহা ছাড়া দেশের অন্যান্য এলাকায় বিনোদনকেন্দ্রের শিশু-কিশোরসহ সব বয়সের মানুষের উপস্থিতি লক্ষ করা গিয়াছে। কোথাও তাহারা ভিড় করিয়াছে ট্রেন লাইনের উপরে, কোথাও পুরাতন ব্রিজে। পূর্বে মানুষ উত্সব পার্বণে সিনেমা হলে গিয়া সিনেমা দেখিত, বর্তমানে সেই চলও হ্রাস পাইয়াছে। ফলে সার্বিকভাবে বিনোদনকেন্দ্রের প্রতি আকর্ষণ পরিলক্ষিত হইয়াছে।

অভ্যন্তরীণ পর্যটনের এই উন্নতি খুবই ইতিবাচক বার্তা বহন করে। নানা সংকট সত্ত্বেও সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অভ্যন্তরীণ পর্যটন বৃদ্ধি পাইয়াছে। মানুষের আর্থিক সক্ষমতা যে বাড়িয়াছে, ইহা তাহারই প্রতিফলন। দেশের অভ্যন্তরে এই পর্যটন প্রবণতার ফলে পর্যটনের জন্য দেশের বাহিরে যাইবার  সংখ্যাও কমিবে। ফলে যে অর্থ পূর্বে মানুষ দেশের বাহিরে ভ্রমণে ব্যয় করিত তাহার খানিকটা দেশেই থাকিয়া যাইবে। তবে ইহাতেই সন্তুষ্ট না হইয়া পর্যটন খাতের উন্নতিতে আরো অবকাঠামোগত উন্নয়নের মনোযোগী হইতে হইবে। আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ পর্যটনের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করিতে সচেষ্ট হইতে হইবে। বিশ্বব্যাপী পর্যটন খাতের যে বিরাট বাজার রহিয়াছে সেইখানে আমাদের ভাগ অতি সামান্যই; উহা বৃদ্ধি করিতে কী কী করা যায় তাহা সংশ্লিষ্টদের ভাবিয়া দেখিতে হইবে। সর্বোপরি পর্যটনের এই আগ্রহ সরকারকে এই খাতে যেমন আরো মনোযোগী করিবে, তেমনি বাহিরের দেশের পর্যটকরাও বাংলাদেশ সফরের ব্যাপারে আগ্রহী হইয়া উঠিবে বলিয়া আমাদের ধারণা।