শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

সড়ক সংস্কারে অবহেলা

আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২১:৩২

কুমিল্লা জেলার অন্তর্গত চান্দিনা উপজেলার অধিকাংশ সড়কের অবস্থা বেহাল। সেখানে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করিয়াছে। ভাঙা ও জলাবদ্ধ সড়কে চলিতে চলিতে অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন বিকল হইয়া পড়ে। মানুষ প্রায়শই নিপতিত হয় ছোটো-বড়ো দুর্ঘটনায়। ২০২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই উপজেলায় সড়ক রহিয়াছে ৩৩৬টি। ইহার মধ্যে প্রধান সড়কের সংখ্যা অন্তত ১২টি। এইসব সড়কের সঙ্গে উপজেলার রহিয়াছে সরাসরি সংযোগ। কিন্তু এই ১২টি সড়কের মধ্যে আটটির অবস্থাই শোচনীয়। খানাখন্দের কারণে চলাচল করা প্রায় দুরূহ হইয়া পড়িয়াছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলেরও এমন অনেক সড়ক রহিয়াছে, যাহা চলাচলের অনুপযোগী। সংস্কারের উদ্যোগ যে নেওয়া হইতেছে না তাহা নহে। তবে অভিযোগ রহিয়াছে যে, একদিকে সংস্কার করা হইতেছে অন্যদিক হইতে রাস্তা ভাঙিয়া যাইতেছে। এক বত্সর না যাইতেই রাস্তা নষ্ট হইয়া যাইতেছে। একদিকে বর্ষাকালে রাস্তা মেরামত করা হইতেছে, অন্যদিকে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় সেই সড়কের সংস্কার কাজ টেকসই হইতেছে না।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে চান্দিনার মাধাইয়া হইতে চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার রহিমানগর সড়কটির কথাই ধরা যাক। ইহা একটি ব্যস্ততম সড়ক। কিন্তু ইহার বিভিন্ন স্থানে তৈরি হইয়াছে ছোটো-বড়ো গর্ত । ইহা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতাধীন। ইহা সংস্কারে মান খারাপ হওয়ায় উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ হইতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পুনঃসংস্কারের জন্য চিঠি প্রদান করা হয়। কিন্তু তাহারা এই ব্যাপারে কোনো গ্রাহ্য করে নাই। ইহাতে ঐ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জামানতের অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়। ইহাতে আবার দেখা দেয় আইনি জটিলতা এবং সড়কটি সংস্কারের জন্য এখন নূতন করিয়া টেন্ডার দিতে পারিতেছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সেইখানকার উপজেলা প্রকৌশলী বলিতেছেন, এই উপজেলার প্রধান কয়েকটি সড়ক ব্যতীত অধিকাংশ সড়কের সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যে টেন্ডার দেওয়া হইয়াছে। আগামী বত্সরের মাঝামাঝি সময়ে সমগ্র উপজেলার সবগুলো রাস্তার সংস্কারকাজ শেষ হইবে। আমরা সেই আশায় থাকিলাম। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও উদাসীনতায় সংস্কারকাজের মান যে আবারও খারাপ হইবে না তাহা কি নিশ্চয়তা দিয়া বলা যায়?

চান্দিনা একটি উদাহরণ মাত্র। প্রকৃতপক্ষে সারাদেশের আনাচ-কানাচে অনেক সড়ক রহিয়াছে, যাহা ঠিকমতন সংস্কার করা হইতেছে না। আমাদের দেশে সড়ক নির্মাণ, সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল বটে, তবে জনস্বার্থেই এইসব কাজ ত্বরান্বিত করিতে হইবে। কেননা এইসব কাজ এতটাই জনগুরুত্বপূর্ণ যে, তাহা ঠিকমতন ও ঠিক সময়ে সম্পন্ন না হইলে তাহাতে কোনো না কোনোভাবে সরকারের বদনামই হইয়া থাকে। একটি দূরদর্শী সরকার কেন এই অবহেলা মানিয়া নিবে?