শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ভিসির দুর্নীতির প্রমাণ দিতে না পারলে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা :প্রধানমন্ত্রী

আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০১৯, ২২:৫৫

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে তোলা দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারলে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ে অসুস্থ, অসচ্ছল ও বিভিন্ন সময় দুর্্ঘটনায় হতাহত সাংবাদিকদের পরিবারকে আর্থিক অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে আরো বলেন, ‘জাবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তাদের প্রমাণ করতে হবে। প্রত্যেকে যারা অভিযোগ নিয়ে আসছে, যারা বক্তৃতা দিচ্ছে, আমি বলেছি সমস্ত ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে। যদি দুর্নীতি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে দুর্নীতি করলে যে শাস্তি, যে অভিযোগকারী সে যদি ব্যর্থ হয় প্রমাণ করতে, তাকে কিন্তু সেই সাজা পেতে হবে। এটা কিন্তু আইনে আছে। মিথ্যা অভিযোগ করলে আইন ব্যবস্থা নেবে। আপনাদের স্পষ্ট জানিয়ে দিলাম।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা প্রায়শই দুর্নীতির অভিযোগে ভাইস চ্যান্সেলরদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন, তাদের অবশ্যই অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির অভিযোগে সৃষ্ট অশান্ত পরিস্থিতির পটভূমিতে শেখ হাসিনা আরো বলেন, কোনো রকম আইনগত ভিত্তি ছাড়া আন্দোলনের নামে ক্লাস বন্ধ, ভিসিদের বাসভবন ও কার্যালয়ে হামলা বরদাশত করা হবে না।  এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বুয়েটের শিক্ষার্থীরা এক জন ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় আন্দোলন করছে। এ হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার এবং মামলা দায়েরের পরও এই আন্দোলন অব্যাহত রাখার কোনো যুক্তি আমি দেখি না। দিনের পর দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকা বরদাশত করা হবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ?উন্নয়নকাজ শুরু হলেই আন্দোলন কেন—এমন প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যখনই উন্নয়নের কোনো কাজ দেওয়া হয়, তখনই এই আন্দোলন যেন আরো ঘনীভূত হয়ে উঠে। কেন? তাহলে যারা আন্দোলন করেন তাদেরও ভাগ-বাটোয়ারার ব্যাপার আছে, নাকি ভাগে কম পড়ছে, আমার প্রশ্ন সেখানেও আছে। কার ভাগে কম পড়ল যে এই আন্দোলন?’ আন্দোলনে থাকা শিক্ষকদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এভাবে ছেলেমেয়েদের জীবন নষ্ট করার অধিকার কি আছে?’

প্রধানমন্ত্রী একটি স্কুলে প্রথম আলো আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আয়োজকদের অবহেলায় বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল স্কুল ও কলেজের এক ছাত্রের মৃত্যুর নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘তারা (প্রথম আলো) কীভাবে এ ধরনের অবহেলা করতে পারে। স্কুল শিক্ষার্থীরা যেখানে ঘোরাফেরা করছে সেখানে এই ধরনের একটি অনুষ্ঠান আয়োজনে তাদের কোনো দায়িত্বশীলতা ছিল না। এটি একটি গুরুতর অভিযোগ, এটি সহ্য করা যায় না। এটি বরদাশত করা হবে না।’ অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশেই শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সের মতো হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও ছাত্রটিকে মহাখালীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী প্রথম আলো কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেন।

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান এবং তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন। তথ্যসচিব আবদুল মালেক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া বাংলাদেশ অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সাংবাদিক আবেদ খান, পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, বিটিভির মহাপরিচালক এস এম হারুনুর রশিদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মোল্লা জালাল, সাধারণ সম্পাদক শাবান মাহমুদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি আবু জাফর সূর্য, সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।