বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন মোকাবিলায় একযোগে কাজ করতে হবে :অর্থমন্ত্রী

আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০১৯, ২২:০৭

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, মানিলন্ডারিং বা অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন বিশ্বের প্রতিটি দেশের জন্য মারাত্মক সমস্যা। এটি শুধু অর্থনীতিকে ঝুঁকিতে ফেলে না, সামষ্টিক অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না, এটি সমগ্র বিশ্বের মানবজাতির জন্য মারাত্মক সমস্যা। এটি সমগ্র মানবজাতির এক নম্বর শত্রু। তাই এই সমস্যা সমাধানে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। গতকাল রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন রোধে জাতীয় কৌশলপত্র ২০১৯-২০২১’ নিয়ে সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, বিএফআইইউ প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান,     বাংলাদেশে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান ও অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকেরা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সন্ত্রাস ও মানিলন্ডারিং জাতির এক নম্বর শত্রু। ভবিষ্যত্ প্রজন্মের সোনালি ভবিষ্যতের জন্য এটি প্রতিরোধ করতে হবে। অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন নিয়ে আমরাও সমস্যায় আছি। তবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে আছে। সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি ও মানিলন্ডারিংয়ের বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছেন। এই সমস্যা দূর করতে তিনি কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, মানিল্ডারিং বৈশ্বিক সমস্যা। মানিলন্ডারিংয়ের প্রায় ৮০ শতাংশই হয় আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে। এ জন্য অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সব রাষ্ট্রের সহায়তা প্রয়োজন।

সেমিনারে অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন রোধে তৃতীয় জাতীয় কৌশলপত্র ২০১৯-২০২১ নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান। তিনি বলেন, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে বৈশ্বিক ফ্যাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) নিয়মনীতি পরিপূর্ণভাবে মেনে চলছে বাংলাদেশ। ওই নীতিমালা বাস্তবায়নে ২০১৫-১৭ জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন করে ৭১টি অ্যাকশন সম্পূর্ণভাবে এবং ৩১টি অ্যাকশন আংশিক বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ। এখন ২০১৯-২০২১ জাতীয় কৌশলপত্রে ১১টি কৌশল এবং ১৩৭টি অ্যাকশন কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করবে। এর মাধ্যমে অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, অর্থপাচারের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে আমদানি-রপ্তানিতে পণ্য মূল্য কম-বেশি দেখানো। এটি প্রতিরোধে এনবিআর কাজ করছে। ইতিমধ্যে এই ধরনের ঘটনা চিহ্নিত করে ৬১টি মামলা করা হয়েছে।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ২০১৬ সাল থেকে কমিশন ১৬৫টি ব্যাংক হিসাবে ২০ কোটি ১৮ লাখ টাকা জব্দ করেছে। একই সময়ে ২১টি ভবন/বাড়ি, ২৪টি ফ্ল্যাট, ৭৭ একর জমি, ৫টি বিলাসবহুল গাড়িও ক্রোক করা হয়েছে।