শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ব্রিটেনে নির্বাচন আজ

আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ২২:২৬

ব্রিটেনে বহুল আকাঙ্খিত নির্বাচন আজ। আজকের নির্বাচনের মাধ্যমেই জানা যাবে দেশটির ভবিষ্যত। কেবল ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা না থাকাই এর মাধ্যমে নির্ধারিত হবে না, দেশটির অর্থনৈতিক অগ্রগতির ভাল-মন্দও জানা যাবে আজকের নির্বাচনের ফলাফলে। দেশটিতে ইউরোপীয় ইউয়িননে থাকা না থাকা নিয়ে নানা মত রয়েছে। তবে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইইউ ছাড়লে ব্রিটেনের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাবে। গতকাল পর্যন্ত বিভিন্ন সংস্থার জরিপে দেখা গেছে, ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ বা টোরি দল সামান্য ব্যবধানে      সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারে। তবে আশা ছাড়ছে না লেবার পার্টিও। কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের আশঙ্কাও আছে। খবর দ্য টেলিগ্রাফ ও ডেইলি মেইলের

আকাঙ্খার ভোট আজ : সকাল ৭টায় শুরু হয়ে রাত ১০ টায় ভোট শেষ হবে। ২৬ নভেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত যারা নিবন্ধন করেছেন তারাই ভোট দিতে পারবেন আজ। আর যারা পোস্টাল ভোট দিতে চেয়েছেন তাদেরকেও ২৬ নভেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে নিবন্ধন করতে হয়েছে। যারা করেছেন তাদের ভোট আজ রাত ১০টার মধ্যে গ্রহণ করা হবে। আর যারা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন তাদেরকে সকাল ৭টা থেকে ১০ টার মধ্যে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে। একজনের ভোট আরেকজন দেওয়ার জন্য ৪ ডিসেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে জানাতে হয়েছে। তবে জরুরি প্রক্সি ভোট দিতে আজও আবেদন করা যাবে। রাত ১০টায় বুথ ফেরত জরিপের ফল জানা যাবে। আর কাল শুক্রবার ভোটের ফলাফল জানা যাবে।

টোরিদের বড়ো জয়ের অর্থ ‘ব্রেক্সিট’ :২০১৭ সালে তত্কালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে আগাম নির্বাচন দিয়েছিলেন। কিন্তু একক সংখ্যাগিরষ্ঠতা না পাওয়ায় জোট সরকার গঠনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু ডিইউপি টোরি দলকে ব্রেক্সিটে পুরোপুরি সমর্থন দেয়নি। ফলে ব্রেক্সিট কার্যকর করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। ৬৫০টি আসনে ভোট হবে আজ। সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার গঠনে ৩২৬ আসনে জয় পেতে হবে। টোরি দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে আগামী ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ব্রিটেন ইইউ থেকে বেরিয়ে যাবে। আর না পেলে ব্রিটেনের ভবিষ্যত শঙ্কার মধ্যে পড়বে!

ঝুলন্ত পার্লামেন্ট :কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হবে। সেক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে হয় পদত্যাগ করতে হবে না হয় জোট সরকার গঠনের চেষ্টা চালাতে হবে। তবে এই সরকার গঠন বরিসের জন্য কঠিন হবে। কারণ ইতোমধ্যে লিবারেল ডেমোক্র্যাটস পার্টির নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন, তারা টোরি কিংবা নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির (ডিইউপি) সঙ্গে জোট করবেন না। এরপর হয়তো লেবার পার্টি সরকার গঠনের চেষ্টা চালাবে। সেক্ষেত্রেও সমস্যা আছে। লিব ডেম নেতা জো সুইনসন বলেছেন, তারা লেবার পার্টির সঙ্গে জোট করতে রাজি, তবে নেতা জেরেমি করবিনকে সরে দাঁড়াতে হবে। যদি তিনি পদত্যাগ না করেন তাহলে তিনি ছোটো দল প্লেইড সিমরু, দ্য গ্রিনস এবং স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির সঙ্গে জোট করতে পারেন। তবে এজন্য স্কটল্যান্ডে স্বাধীনতার জন্য দ্বিতীয় গণভোটের আয়োজনকে মেনে নিতে হবে করবিনকে। লেবার পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে ইইউতেই থেকে যাবে ব্রিটেন। যদিও করবিন এই ইস্যুতে দ্বিতীয় গণভোট করবেন বলে জানিয়েছেন।

জরিপে এগিয়ে টোরি

ইউগভ নামের জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, টোরি দল ৩৩৯ আসনে জয় পাবে। সেখানে লেবার পার্টি ২৩১ এবং লিবারেল ডেমোক্র্যাটস পাবে ১৫টি আসন। সেক্ষেত্রে বরিস জনসনের দল লেবার পার্টির ২২টি আসন দখলে নিতে পারে। ভোটের ৪৩ শতাংশ টোরি ও ৩৪ শতাংশ পাবে লেবার পার্টি। তবে ইউগভ সতর্ক করেছে, টোরি দল ৩১১ আসনের কমও পেতে পারে। সেক্ষেত্রে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট নিশ্চিত হয়ে যাবে। উচ্চকক্ষ হাউজ অব লর্ডস নির্বাচিত নয়। কিছু প্রধান দল এখানে প্রতিনিধি মনোনয়ন দেয়। কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে ঝুলন্ত পার্লামেন্ট হবে।