গত ৬ জানুয়ারি মার্কিন কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটলে ট্রাম্পসমর্থক ও কট্টর ডানপন্থিদের হামলা নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসছে। ফেডারেল প্রসিকিউটররা আদালতে দেওয়া এক নথিতে বলেছে, হামলাকারীদের উদ্দেশ্য ছিল ক্যাপিটল ভবন দখলে নেওয়া এবং নির্বাচিত কর্মকর্তাদের ওপর গুপ্তহত্যা চালানো। আলজাজিরার এক খবরে বলা হয়েছে, অ্যারিজোনার বিচার বিভাগের আইনজীবীদের লেখা নথিতে দাঙ্গাকারী জ্যাকব চ্যান্সলিকে এফবিআইর জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্য ছিল ক্যাপিটল দখলে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নির্বাচিত কর্মকর্তাদের হত্যা করা। চ্যান্সলিকে গতকালই আদালতে তোলার কথা ছিল। প্রসঙ্গত, ক্যাপিটলে বিদ্রোহে উসকানির দায়ে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিশংসন করা হয়েছে। বিদ্রোহে ট্রাম্প ও তার পরিবারের সদস্যদের ভূমিকাও তদন্ত করছেন প্রসিকিউটররা।
এদিকে ক্যাপিটল ভবনে হামলার পর ট্রাম্পর্কে অভিশংসন নিয়ে রিপাবলিকান পার্টিতে বড় বিভক্তি দেখা দিয়েছে। প্রতিনিধি পরিষদে ১০ জন রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ট্রাম্পকে অভিশংসনে ভোট দিয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন কংগ্রেসওম্যান লিজ চেনি। ভোটদানের পর তাকে রিপাবলিকান পার্টির নেতৃত্ব ছাড়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে হুমকিও পাচ্ছেন তিনি। অন্য আইনপ্রণেতারাও নিজ দলেই চাপের মুখে রয়েছেন। মিশিগানের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা পিটার মেইজার বলেছেন, আমাদের কেউ হত্যা করার চেষ্টাও করতে পারে।
হোয়াইট হাউজ ছাড়ার
প্রস্তুতি ট্রাম্পের
আগামী ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেবেন জো বাইডেন। আর হোয়াইট ছাড়তে হবে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। এরই মধ্যে সেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সিএনএনের এক খুবই নিরানন্দ পরিবেশে হোয়াইট হাউজ ছাড়ছেন ট্রাম্প। তিনি এখন অনেকটাই নিঃসঙ্গ। অনেক কাছের মানুষও তার থেকে দূরে সরে গেছেন। গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকও নেই। তারপরও সম্প্রতি ট্রাম্পের খুব কাছের উপদেষ্টারা এক আলোচনায় তার সম্ভাব্য পদত্যাগের বিষয়ে কথা তুলেছিলেন। কিন্তু ট্রাম্প তা তাত্ক্ষণাত্ নাকচ করেন। ট্রাম্প সাবেক প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, তিনি নিক্সনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে চান না। কেননা, নিক্সনই যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে একমাত্র পদত্যাগকারী প্রেসিডেন্ট। এছাড়া তিনি বলেন, তত্কালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ড যেমন নিক্সনকে ক্ষমা করেছিলেন তেমন করে তার ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স তাকে ক্ষমা করুক—সেটাও চান না। ২০ জানুয়ারি একটি বড় বিদায় সংবর্ধনা আয়োজনের কথা ট্রাম্প তার ঘনিষ্ঠজনদের জানিয়েছেন।
খবরে আরো বলা হয়েছে, ট্রাম্পের হোয়াইট হাউজ ছাড়ার প্রস্তুতি সব জায়গাতেই দেখা যাচ্ছে। ট্রাম্পের কর্মীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এরই মধ্যে অনেকে চলে গেছেন। হোয়াইট হাউজের প্রেসবক্স এখন পুরোপুরি শূন্য। ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষমতা ছাড়ার একদিন আগে ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ ছাড়বেন। তবে তিনি ২০ জানুয়ারি সকালে হোয়াইট হাউজ ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন বলেও খবরে বলা হয়েছে। ট্রাম্প সামরিক কায়দায় সমর্থকদের কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তবে এটা কোথায় হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। ইয়াহু নিউজের এক খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের চেয়ে ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ ছাড়তে আরো বেশি প্রস্তুত।