বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

কোম্পানীগঞ্জে হামলায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বাদল আহত, মিছিলে পুলিশের গুলি

আপডেট : ১২ জুন ২০২১, ২২:৫১

গতকাল শনিবার সকালে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের গাড়িতে হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। এসময় গাড়িতে থাকা বাদল ও তার সহযোগী হাসিব আহসান আলাল আহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে বাদলের সমর্থক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিছিল বের করলে টেকের বাজারে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বেধে যায় এবং এক পর্যায়ে পুলিশ মিছিলে গুলি চালালে ছয় জন গুলিবিদ্ধ হন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকাল ৯টার দিকে ঢাকায় যাওয়ার পথে বসুরহাট উত্তর বাজার এলাকায় একদল দুর্বৃত্ত বাদলের গাড়ির গতিরোধ করে অতর্কিত হামলা চালায় এবং গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় গাড়িতে থাকা বাদল ও আলাল গুরুতর আহত হন। আহতদের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার বাদলকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। 

আহত হাসিব আহসান আলাল জানান, কেচ্ছা রাসেল, পিচ্চি মাসুদ, শিহাব খান, রাসেল ও খান সাহেবের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জনের একদল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ করে। তারা গাড়ি ভাঙচুর করে এবং আমাদের মারধর করে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা ৩ রাউন্ড গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়। কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, বাদলের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এ হামলা চালিয়েছে। থানায় অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল শনিবার টেকের বাজারে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল বের  করলে এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয় এবং এ সময় সংগঠনটির ছয় নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হন। সংঘর্ষকালে থানার একজন ওসি (তদন্ত) এবং চার কনস্টেবলও আহত হন।    

জানা যায়, মিজানুর রহমান বাদলের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে বাদলের অনুসারী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। হামলার বিচারের দাবিতে তারা ৪৮ ঘণ্টা হরতালের ডাক দেন। চরকাঁকড়া ইউনিয়নের টেকের বাজারে হরতালের সমর্থনে রাস্তায় গাছ ফেলে ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ করার সময় পুলিশ নেতাকর্মীদের বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বেধে যায়। এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি চালালে আওয়ামী লীগের ছয় নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফখরুল ইসলাম সবুজ (৫৪) ও তার ছেলে তরিকুল ইসলাম চয়ন (২০)। গুরুতর আহত চয়নকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর অবস্থার অবনতি ঘটলে পরে তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার চোখসহ শরীরে বিভিন্ন অংশে গুলির চিহূ রয়েছে বলে তার পরিবার সূত্রে জানা যায়। আহত সবুজ জানান, তারা কাদের মির্জার গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন করার সময় পুলিশ তাদের ওপর বেপরোয়া গুলি চালায়। এতে তারা পিতা-পুত্রসহ অন্তত ছয় জন গুলিবিদ্ধ হন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, পুলিশ আত্মরক্ষার্থে ৩৩ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তিনি আরো বলেন, সংঘর্ষের সময় আমি ছাড়াও পুলিশের তিন কনস্টেবল আহত হন।