বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

টাইগারদের তোপে উড়ে গেল আফগানিস্তান

আপডেট : ২৫ জুন ২০১৯, ০০:৩৬

এবারের বিশ্বকাপকে যেন নিজেকে নতুন করে চেনানোর এক আসর হিসেবে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। প্রতিটা ম্যাচে ব্যাট হাতে বিদ্যুতের মতো ঝলসাচ্ছেন। বল হাতে এর আগ পর্যন্ত ছিলেন স্বাভাবিক। গতকাল হয়ে উঠলেন ত্রাস। ব্যাটে ৫১ রান করার পর সেই সাকিবই বল হাতে নিলেন ৫ উইকেট। বিশ্বের মাত্র দ্বিতীয় অলরাউন্ডার হিসেবে বিশ্বকাপ ইতিহাসে একই ম্যাচে ৫০ রান করলেন এবং কমপক্ষে ৫ উইকেট নিলেন সাকিব! এর আগে এই রেকর্ড ছিল কেবল ভারতের যুবরাজ সিংয়ের।

সাকিব আল হাসানের এই একক প্রদর্শনীর দিনে বাংলাদেশের কাছে উড়েই গেল আফগানিস্তান। ‘সম্মানের ম্যাচ’ হয়ে দাঁড়ানো লড়াইয়ে আফগানদের ৬২ রানে হারাল বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ করেছিল ৭ উইকেটে ২৬২ রান। জবাবে ৪৭ ওভারে ঠিক ২০০ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান।

বোলিং সহায়ক উইকেটে বাংলাদেশের ছুড়ে দেওয়া লক্ষ্যটা বেশ বড়ই ছিল। সেই লক্ষ্যে আফগানিস্তান ধীরে চলতে শুরু করে। ১০.৫ ওভারে ৪৯ রান তোলার পর প্রথম উইকেট হারান আফগানরা। প্রথম উইকেট নেন সাকিব। এরপর হাশমতউল্লাহ শহিদিকে ফেরান মোসাদ্দেক। তারপর টানা ৩ উইকেট নিয়ে আফগানদের লড়াই থেকে ছিটকেই দেন সাকিব। এই পর্যায়ে ৭ ওভারে ১০ রান দিয়ে সাকিব ৪ উইকেট তুলে নেন। শেষ দফায় আক্রমণে এসে প্রতিরোধ গড়া নাজিবুল্লাহর উইকেট নিয়ে পঞ্চম উইকেট শিকার করেন সাকিব। সঙ্গে মুস্তাফিজুর রহমান তুলে নেন ২ উইকেট।

এর আগে টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় আফগানিস্তান। স্পিনের বিপক্ষে ভালো বলে কাল ইনিংস শুরু করার দায়িত্ব দেওয়া হয় লিটন দাসকে। তামিম ইকবালের সঙ্গে শুরুটা একেবারে খারাপ করেননি লিটন। তিনি ১৭ বলে ১৬ রান করে আউট হয়ে যান। লিটনের আউটটা ছিল অবশ্য অত্যন্ত বিতর্কিত। রিপ্লেতে দেখা যায় তার ক্যাচটা ধরার আগে বল মাটিতে লেগেছিল। কিন্তু মাঠের আম্পায়ার লিটনকে আউট ঘোষণা করার পর বিতর্কিতভাবে তৃতীয় আম্পায়ারও একই সিদ্ধান্ত দেন।

লিটন আউট হওয়ার পর তামিমকে নিয়ে প্রথম পালটা আক্রমণ করেন সাকিব। তামিম ৫৩ বলে ৩৬ রান করে ফিরে আসেন। এরপর মুশফিকের সঙ্গে জুটি করে এগোতে থাকেন সাকিব।

এবার বিশ্বকাপে পঞ্চম বারের মতো ৫০ পার করা ইনিংস খেলেন সাকিব। এর ভেতর দিয়ে চলতি বিশ্বকাপে আবারও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে ওঠেন। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপের ইতিহাসে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১ হাজার রান করে ফেলেন সাকিব। সেই সঙ্গে তার উইকেটও এখন বিশ্বকাপে ৩০-এর বেশি। ফলে তিনি বিশ্বকাপ ইতিহাসের একমাত্র ক্রিকেটার, যার ১ হাজারের বেশি রান ও ৩০-এর বেশি উইকেট আছে!

শেষ পর্যন্ত ৬৯ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলে ফিরে আসেন সাকিব। তবে মুশফিকের লড়াই জারি ছিল আরো অনেকক্ষণ। সাকিব ফেরার পরপরই ৩ রান করে ফেরেন সৌম্য সরকার। তিনি লিটনকে জায়গা দিতে এদিন মিডল অর্ডারে ব্যাট করেছিলেন। মুশফিকের সঙ্গে এসে যোগ দেন মাহমুদউল্লাহ। তিনি ৩৮ বলে ৫৭ রান করে ফেরেন। এরপর ফিরে আসেন মুশফিক। তিনি ৮৭ বলে ৪টি চার ও একটি ছক্কায় সাজানো ৮৩ রানের ইনিংস খেলেন। মুশফিকের সামনে সুযোগ ছিল টানা দ্বিতীয় ম্যাচে সেঞ্চুরি করার। কিন্তু দলের রান বাড়াতে গিয়ে অল্পের জন্য সেটা মিস করেন।

এরপর দলের রানটা বাড়ানোর আসল কাজ করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তিনি ২৪ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলে ফেরেন।