বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

দক্ষিণ এশিয়ায় পানিবন্দি ৭০ লাখ দেড় শতাধিক মানুষের মৃত্যু

আপডেট : ১৬ জুলাই ২০১৯, ২১:৫৪

দক্ষিণ এশিয়ায় বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। নেপাল ও ভারতে এখন পর্যন্ত ১০০ জনের বেশি মানুষ বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন। পানিবন্দি রয়েছেন ৭০ লাখের বেশি মানুষ। এছাড়া বাস্তুচ্যুত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএন ও বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার নেপালে বৃষ্টিপাত থেমেছে। তবে দুর্যোগ এখনই কাটছে     না। আগামী কয়েক দিনে নেপাল, ভারত, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে আবহাওয়া পূর্বাভাস বলছে। বন্যা ও ভূমিধসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত নেপাল। দেশটিতে কমপক্ষে ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহার ও আসামে বন্যার কারণে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া পাকিস্তানে বন্যায় মারা গেছে ২৮ জন এবং বাংলাদেশে ১৬ জন।

ভারতের কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, বন্যার কারণে ভারতে দুই রাজ্যে ৬৭ লাখ মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত। বিহারে ২৫ লাখ ও আসামে ৪২ লাখ মানুষ পানিবন্দি। লাখ লাখ হেক্টরের বেশি ফসলি জমি এখন পানি নিচে। বন্যার কারণে এসব রাজ্যের রাস্তা, ঘরবাড়ি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গবাদিপশু ও বন্যপ্রাণী পানিতে ভেসে গেছে। বিহারে রাস্তা ও রেললাইন পানিতে তলিয়ে গেছে। লোকজন সহায়-সম্বল মাথায় নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করছে।

সোমবার রাতে আসামে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি আরো বেড়েছে। আসামের ৩৩টি জেলার মধ্যে ৩১ থেকে ৩২টি এখন বন্যাকবলিত। আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল পরিস্থিতিকে ‘অত্যন্ত সংকটজনক’ বলে বর্ণনা করেছেন। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের এজেন্সিগুলো কাজ করছে। যে কোনো সময় ব্যবহারের জন্য বিমান বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিহারের এক লাখ ১৬ হাজার ও আসামের ৮৩ হাজার মানুষকে সাময়িক আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে।

নেপালে ৪২ হাজারের বেশি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য কাজ করছেন। তবে ক্ষতিগ্রস্ত ও বাস্তুচ্যুত মানুষের জরুরি ত্রাণ সহায়তা দিতে কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বন্যার কারণে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের লোকজন ব্যাপক ঝুঁকিতে রয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, প্রতিবছর মৌসুমি জলবায়ুর কারণে বৃষ্টিপাত হয় এই অঞ্চলে। কিন্তু আকস্মিক ব্যাপক বৃষ্টিপাত ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের কারণ হয়। চলতি বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হলে বাস্তুচ্যুত মানুষের পাশাপাশি প্রাণহানির সংখ্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।