বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

ডিএসইতে সূচক ৩৩ মাসে সর্বনিম্ন

আপডেট : ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২২:৪৯

দুই কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর ফের দরপতনের ধারায় শেয়ারবাজার। গতকাল বুধবার উভয় শেয়ারবাজারেই বড়ো দরপতন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৭৫ পয়েন্ট কমে ফের ৫ হাজারের নিচে নেমে গেছে। গতকাল দিনভর লেনদেন শেষে ডিএসইর সূচক অবস্থান করছে ৪ হাজার ৯৩৩ পয়েন্টে। এর আগে ২০১৬ সালের ২১ ডিসেম্বর ডিএসইর সূচক ছিল ৪ হাজার ৯২৪ পয়েন্ট। অর্থাত্ প্রায় ৩৩ মাসে সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে এসেছে সূচক। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ২১৪ পয়েন্ট। এ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ফলে দিন দিন বাজার নিয়ে আস্থাহীনতা আরো বাড়ছে।

টানা দরপতনের জন্য বেশকিছু কারণকে দায়ী করেছেন অর্থনীতিবিদরা। পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ ইত্তেফাককে বলেন, উদ্যোক্তারা তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। এর কিছু আইনিভাবে আর কিছু বেআইনিভাবে বিক্রি হচ্ছে। ফলে বাজারের শেয়ারের সাপ্লাই বেড়ে গেছে। সেই হারে অর্থের জোগান না থাকায় দর কমছে। অন্যদিকে গ্রামীণফোন ইস্যু ও পিপলস লিজিংয়ের বন্ধ হয়ে যাওয়া, বাজারে ভালো শেয়ারের অনুপস্থিতি ও বিদেশিদের শেয়ার বিক্রির প্রবণতা বেড়ে যাওয়াও এর পেছনে কারণ বলে মনে করছেন তিনি। বাজারে ভালো কোম্পানির শেয়ার না আনতে পারায় বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) দায়ী করে তিনি বলেন, গত ১০ বছরে কোনো ভালো শেয়ার বাজারে আসেনি। এসইসি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ দেখেনি।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজার নিয়ে আস্থাহীনতায় সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী বাজার থেকে বের হয়ে গেছেন। আবার অনেকের বিও অ্যাকাউন্ট দীর্ঘ দিন ধরেই নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে। তারা বলছেন, দেশের টেকসই জিডিপি প্রবৃদ্ধির স্বার্থে শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতায় বিশেষ নজর দেওয়া দরকার।

এর আগে টানা ছয় কার্যদিবস দরপতনের পর গত ৪ সেপ্টেম্বর ডিএসইর সূচক ৫ হাজারের নিচে নেমে আসে। দুই কার্যদিবস সূচক কিছুটা বাড়লেও গত তিন কার্যদিবস ধরে ফের পতনের ধারায় বাজার।

 বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইএতে ৩৫৩টি কোম্পানির ৫০২ কোটি ৪২ লাখ ৭৫ হাজার ৪৬০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনকৃত কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৩৭টির, কমেছে ২৮৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টি কোম্পানির শেয়ারদর।

লেনদেনের ভিত্তিতে প্রধান ১০টি কোম্পানি হলো—ন্যাশনাল টিউবস, জেএমআই সিরিঞ্জ, বীকন ফার্মা, মুন্নু সিরামিক্স, স্টাইল ক্র্যাফট, মুন্নু স্টাফলার, ভিএসএফ থ্রেড, ওয়াটা ক্যামিকেল, আইপিডিসি ও স্কয়ার ফার্মা।

দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কোম্পানি হলো—ন্যাশনাল টিউবস, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকস, জেমীনি সী ফুড, মুন্নু স্টাফলার, জেএমআই সিরিঞ্জ, আরামিট লিমিটেড, বীকন ফার্মা, সোনালি আঁশ, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ও রেকিট বেঙ্কিজার।

অন্যদিকে দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কোম্পানি হলো—এমএল ডায়িং, ভিএসএফ থ্রেড, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এসইএমএল আইবিবিএল শরীয়াহ্ ফান্ড, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স, আইসিবি ৩য় এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স, আরামিট সিমেন্ট, সিএনএ টেক্স ও এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড।

অন্যদিকে, সিএসইতে হাতবদল হওয়া শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৬টির, কমেছে ২১০টির, অপরিবর্তিত আছে ১৫টির দর।