শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

চাঁদার দাবিতে মসজিদের নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছে ছাত্রলীগ

আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২২:৪০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠিত মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ছাত্রলীগ। চাঁদার দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার তারা ওই মসজিদ নির্মাণকাজের ঠিকাদার, প্রকৌশলী ও শ্রমিকদের মারধর এবং বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ভাঙচুর করে।

জানা গেছে, তেঁতুলিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাসফিকুর রহমান সাকিবের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী ঠিকাদারের কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। এ ঘটনায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রংপুরের নর্দান টেকনো ট্রেড থানায় অভিযোগ দিয়েছে।

জানা গেছে, সারা দেশের ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে তেঁতুলিয়া উপজেলায় মডেল মসজিদ নির্মাণকাজ শুরু হয়। ১২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনতলা বিশিষ্ট মডেল মসজিদ নির্মাণ করার কথা। গতকাল সকালে ঠিকাদার নাজমুল হক, গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হুসাইন মো. সাফি মণ্ডলসহ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের উপস্থিতিতে ভিত্তি ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়। এ খবর পেয়ে ছাত্রলীগ                 নেতা সাকিব, প্রিন্স, রাজন, হূদয়সহ ২৫/৩০ জন নেতাকর্মী এসে অস্থায়ী ঘর ও চেয়ার টেবিলসহ বিভিন্ন জিনিস ভাঙচুর করে। এসময় তারা ঠিকাদার নাজমুল হকসহ শ্রমিকদের মারধর করে এবং কাজ বন্ধ করে দেয়। মারধরের চিত্র মোবাইলে ধারণ করার সময় ঠিকাদারের গাড়ির চালকের মোবাইল ফোন এবং এক্সকেভেটরের চাবি খুলে নিয়ে যায়।

রংপুর টেকনো ট্রেডের পরিচালক ঠিকাদার নাজমুল হক জানান, দীর্ঘদিন ধরে সাকিব ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। আমরা তা দিতে অস্বীকার করায় বারবার আমাদের কাজ বন্ধ করে দিচ্ছে। একটি লিখিত অভিযোগ আমি তেঁতুলিয়া থানায় দিয়ে এসেছি। ওই প্রকল্পের প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম ও সাইট ইঞ্জিনিয়ার নিজাম উদ্দিন জানান, চাঁদা না দেওয়ায় এবং ইট, বালু ও পাথর সরবরাহের সুযোগ না দেওয়ায় তারা ভাঙচুর শুরু করে। তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সাকিবের বাবা কাজী আনিসুর রহমান জানান, ছাত্রলীগের কিছু নেতা আমার কাছে আসে যাতে মসজিদ নির্মাণকাজের ছোটো ছোটো কাজ যেমন—বালু, ইট, পাথর সাপ্লাই কাজের দায়িত্ব তাদের দেওয়া হয়। এজন্যই তারা সেখানে ঘোরাঘুরি করে। এর বাইরে আমি তেমন কিছু জানি না।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাসফিকুর রহমান সাকিব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমরা কোথাও কোনো চাঁদাবাজি করিনি। আমরা চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজিতে বিশ্বাস করি না। তবে আমি আমার কর্মীদের এসব থেকে বিরত রাখতে তাদের কাজের ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলাম। তারা যেসব অভিযোগ করছে তা সম্পূর্ণ বানোয়াট।

পঞ্চগড় গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী হুসাইন মো. সাফি মণ্ডল জানান, ঘটনার সময় আমি সেখানে আমি উপস্থিত ছিলাম। একদল ছেলে সেখানে এসে কাজ বন্ধ করে দেয় এবং ঠিকাদারসহ লোকজনদের মারধর করে। আমি বিষয়টি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি জহুরুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি শোনার পর আমি নিজেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। তবে এখনো কেউ আমাকে কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলেই প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।