ভারতের আসামে নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি থেকে বাদ পড়া এক প্রবীণ ব্যক্তির মরদেহ নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে তার পরিবার। গত চার দিন ধরে এই অচলাবস্থা বিরাজ করছে। এনআরসি থেকে বাদ পড়ে তেজপুরের ডিটেনশন সেন্টারে আটক থাকা অবস্থায় গত রবিবার দুলাল চন্দ্র পাল (৬৫) নামের ঐ ব্যক্তি মারা যান। তাকে ভারতীয় নাগরিক ঘোষণার আগ পর্যন্ত মরদেহ নিতে তার পরিবার অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারা বলছে, তাকে ভারতীয় বলে স্বীকার না করা হলে মরদেহ যেন বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
বিবিসি বাংলাকে দুলাল পালের ছেলে আশিস বলেন, বাবাকে যখন বিদেশি বলেই ঘোষণা করা হয়েছে, তাহলে বাংলাদেশেই পাঠিয়ে দেওয়া হোক মরদেহ। আমরা নেব না। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ভারতীয় প্রশাসন নিশ্চিত করেছে যে মৃত ব্যক্তিকে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল বিদেশি বলে ঘোষণা করার পরেই তাকে আটক করে তেজপুর জেলের ভেতরে যে বন্দিশিবির রয়েছে, সেখানে রাখা হয়েছিল।
আশিস পাল বলেন, ১৯৬৫ সালে জমি কেনার দলিল রয়েছে আমদের। সেটাই তো প্রমাণ যে, আমার বাবা ১৯৭১ সালের আগে এখানে এসেছিলেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল সেটা মানল না। বাবা বা আমাদের ভাইদের কারো নামই এনআরসিতে ওঠেনি।
আশিস পাল বলেন, কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে আমাদের। এত কিছু করেও বাবাকে ভারতীয় বলে প্রমাণ করতে পারিনি। জীবিত অবস্থায় যখন তাকে বিদেশি বলে ঘোষণা করা হয়েছে, তাহলে আমরা কেন দেহ নেব? আগে লিখিতভাবে প্রশাসন জানাক যে, আমার বাবা ভারতীয় ছিলেন, তবেই দেহ নেব। এ নিয়ে প্রশাসন পড়েছে এক অদ্ভুত পরিস্থিতিতে।
এখনো দুলাল পালের মরদেহ গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজের মর্গেই রাখা রয়েছে। আর ওদিকে তার বাড়িতে পরিবার-পরিজন হিন্দু শাস্ত্রমতে অশৌচও পালন করতে পারছেন না দেহ সত্কার না হওয়ায়। তার ছেলে বলেন, বাবাকে দাহ করা হয়নি, তাই আমরা শুধু ফল খেয়ে আছি।