শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
The Daily Ittefaq

টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বাড়ছে

আপডেট : ০৯ অক্টোবর ২০১৯, ২১:৩১

ইত্তেফাক রিপোর্ট

টাকার বিপরীতে ডলার শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই মধ্যে প্রতি ডলারে ১৫ পয়সা পর্যন্ত বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হয়েছে ৮৪ টাকা ৬৫ পয়সা। গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার ১ ডলারের জন্য দিতে হয়েছে ৮৪ টাকা ৫০ পয়সা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এক বছর আগে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারের দর ছিল ৮৩ টাকা ৮০ পয়সা। ২০১৯ সালের এপ্রিলে এটি ৮৪ টাকা ৫০ পয়সায় পৌঁছায়। এরপর থেকে টানা ছয় মাস টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার ৮৪ টাকা ৫০ টাকায় স্থির থাকে। আর্ন্তজাতিক বাজারের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার পাশাপাশি রফতানি আয় বাড়াতে ডলারের দর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী গত তিন মাস ধরে অব্যাহতভাবে রফতানি আয় কমছে। গত সেপ্টেম্বরে রফতানি আয় হয়েছে ২৯১ কোটি ৫৮ লাখ ডালার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ কম। আর গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় কমেছে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ। ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস আগের অর্থবছরে একই সময়ের তুলনায় রফতানি আয় কমেছে ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমানো প্রয়োজন। প্রতিযোগী দেশ চীন, ভারত ও ভিয়েতনামসহ বেশ কিছু দেশ কয়েকবার তাদের মুদ্রার মান কমিয়েছে। ভারত সম্প্রতি কমিয়েছে। ডলারের বিপরীতে টাকার মান পুনর্নির্ধারণের বিষয়টি অনেক দিন ধরেই বলে আসছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে গেলে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাবে। আমাদের রপ্তানি পণ্য যেহেতু আমদানিনির্ভর তার ফলে কিছু রপ্তানি খাত বড়ো সুবিধা পাবে না বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা। তাছাড়া ভোগ্যপণ্য আমদানিতে খরচ বেশি হলে এর ভার সাধারণ মানুষের ওপরে আসবে। এদিকে ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকার বিপরীতে ডলার শক্তিশালী করার উদ্যোগে খোলাবাজারে (কার্ব মার্কেট) টাকার বিপরীতে ডলারের দামও বেড়ে গেছে। প্রতি ডলার ৮৭ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ব্যাংকগুলোর কাছে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার দরে ৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা জানান, চাহিদার তুলনায় ডলারের সরবরাহ কম থাকায় দীর্ঘদিন ধরে চাপে রয়েছে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার। ডলারের দর বাড়লে রফতানিকারক ও রেমিট্যান্স প্রেরণকারীরা খুশি হলেও খরচ বাড়ে আমদানিতে। আমদানি খরচ বাড়লে তার প্রভাব পড়ে ভোক্তা পর্যায়ে। বেশি দামে পণ্য কেনার প্রভাবে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। এ ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে অন্য ব্যাংক থেকে ডলার কিনে আমদানি দায় পরিশোধ করতে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়।